সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক : কারও চুলের ছাঁট রোনাল্ডোর মতো। কারও আবার চুলে যেন মেসির ঝলক। কেউ মাথার একদিক ছেঁটে পরিষ্কার করে অন্যদিকে লম্বা চুল রেখেছে। তো কারও ঝাঁকড়া চুলে লাল রং করা। কিন্তু এঁরা কেউই খেলোয়াড় বা অভিনেতা নন। প্রত্যেকেই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। ছাত্রদের এমন এমন বাহারি চুলের স্কুলের মান-মর্যাদা প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা শিক্ষকদের। একাধিকবার তাদের সতর্কও করা হয়েছে। কিন্তু তার পরও চুলের ছাঁট না বদলানোয় চরম সিদ্ধান্ত নেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে তাই এই বাহারি চুলের ছাত্রদের পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড আটকে দিলেন শিক্ষকরা। স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানিয়ে দিয়েছেন, চুল ছোট করে কেটে এলে তবেই অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া হবে।
এলাকায় গান্ধী স্কুল নামে প্রচলিত বারাসত মহাত্মা গান্ধী মেমোরিয়াল হাই স্কুলে মঙ্গলবার উচ্চমাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড বিতরণ করা হয়। স্কুল সূত্রে খবর, এবছর ২২৪ জন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। তাদের মধ্যে অধিকাংশকেই অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া হয়েছে। কেবলমাত্র ৩০ থেকে ৪০ জনের অ্যাডমিট কার্ড আটকে দেওয়া হয়েছে। এই স্কুলের এই সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট ছাত্ররা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। তাদের দাবি, আগাম কোনও নোটিশ ছাড়াই স্কুল কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে স্কুলে শিক্ষকরা বলছেন, একবার নয়, একাধিকবার এই ছাত্রদের সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু তারা কোনও ভ্রুক্ষেপই করেনি।
গান্ধী স্কুলের শিক্ষকদের দাবি, এধরনের চুলের ছাঁট রাখা ছাত্রসুলভ আচরণ নয়। স্কুলের হেড মাস্টার শেখ আলি আহসেন বলেন, “স্কুলের নিয়মাবলিতে স্পষ্ট বলা রয়েছে এধরনের আচরণ বরদাস্ত করা হবে না। নিয়মিত ক্লাসেও এই অনুশাসন মানতে বলা হয়। এদরনের চুলের ছাঁট খুবই দৃষ্টিকটু। অনেকবার বলার পরও এই ছাত্ররা না শোনার কারণে এদিন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” স্কুল শিক্ষকদের থেকে জানা যায়, প্রতিবছরই মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকে নজরকাড়া রেজাল্ট হয় মহাত্মা গান্ধী মেমোরিয়াল হাই স্কুল থেকে। ২০১৯ সালে উচ্চমাধ্যমিকে অষ্টম হয়েছিল এই স্কুলের এক ছাত্র। প্রথম ২৪ জনের মধ্যে এই স্কুলের ছ’জন ছাত্র ছিল। গত বছর ২০০ জন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল, তাদের মধ্যে ১৭৮ জন প্রথম ডিভিশনে পাস করেছে। স্কুলের শিক্ষকদের যুক্তি, ছাত্রদের এধরনের সাজসজ্জা স্কুলের মার্যাদাকে প্রশ্নের মুখে ফেলতে পারে। স্কুলের শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। তাই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.