চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: টাকার বিনিময়ে পড়ুয়াদের সবুজসাথী প্রকল্পের সাইকেল দেওয়ার অভিযোগ উঠল স্কুলের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে কুলটির মিঠানি হাই স্কুলে। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষককে প্রশ্ন করা হলে তিনি মারমুখী হয়ে ওঠেন। এমনকী সংবাদ প্রতিদিন.ইন এর সাংবাদিক এবিষয়ে প্রশ্ন করলে উত্তর দিতে অস্বীকার করেন তিনি।
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার পিকআপ ভ্যানে করে ২০০ টি সবুজসাথী প্রকল্পের সাইকেল স্কুলে আনা হয়। বলা হয়, নবম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের এই সাইকেল বিলি করা হবে। কিন্তু স্কুলের তরফে ছাত্রছাত্রীরা জানানো হয়, ৪০ টাকা করে জমা দিতে হবে শ্রেণি শিক্ষিকার কাছে। তবেই পাওয়া যাবে সাইকেল। পড়ুয়ারা জানিয়েছে, “আমাদের মা-বাবা দিনমজুর। আমাদের কাছে অত টাকা ছিল না। তাই স্কুল চলাকালীন বাড়িতে যাই টাকা আনতে।” কেউ আবার টাকা আনতে না পারায় মেলেনি সাইকেল। অভিভাবকরা জানিয়েছেন, তাঁরা জানতে পেরেছেন সাইকেলগুলি স্কুলে আনা হয়েছে সেই ভাড়া বাবদ নাকি এই ৪০ টাকা নেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই সংবাদমাধ্যম প্রধান শিক্ষককে প্রশ্ন করলে তিনি মারমুখী হয়ে ওঠেন। কিন্ত মুখ্যমন্ত্রী যেখানে বিনামূল্যে সাইকেল বিলি করছেন, সেখানে কোন যুক্তিতে কেন ৪০ টাকা নেওয়া হচ্ছে ? এর জবাবে প্রধান শিক্ষক বৃন্দাবন পাল বলেন, “কীসের মুখ্যমন্ত্রী? টাকা না নিলে কি করে কাজটা হবে?” সংবাদ প্রতিদিন.ইনের প্রতিনিধিকে প্রধান শিক্ষক বলেন, “আপনাকে কোনও উত্তর দেবো না। আমি যা করছি, বেশ করছি।”
জেলা স্কুল পরিদর্শক অজয় পাল বলেন, “এইভাবে প্রধান শিক্ষক টাকা নিতে পারেন না। তদন্ত করে দেখা হবে। শিক্ষা দপ্তরের অতিরিক্ত জেলাশাসক প্রশান্ত মণ্ডল বলেন, যদি এই কাজ হয়ে থাকে তা অত্যন্ত অন্যায়। অবিলম্বে টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিচ্ছি। স্কুল পরিচালন সমিতির সদস্যরাও ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষা সমিতির সভাপতি রাজীব মুখোপাধ্যায় বলেন, অন্যায় কাজ করেছেন প্রধান শিক্ষক। কোনওভাবেই এক টাকাও নেওয়া যায় না। আমরা উচ্চমহল পর্যন্ত ওঁনার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাবো।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.