দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: দিনের পর দিন বন্ধ থাকছে স্কুল। যেদিন স্কুল খোলা থাকছে সেদিন আবার দুপুর হলেই তালাবন্ধ। যার কারণে লাটে উঠেছে মিড-ডে মিল পরিষেবা। দুপুরের আহার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন গ্রামের কয়েকশো দুঃস্থ পড়ুয়ারা। অথচ স্কুল বন্ধ থাকলেও সরকারিভাবে খাতায়-কলমে দেখানো হচ্ছে মিড-ডে মিলের হিসাব। আর মিড-ডে মিল না পেয়ে আর পড়াশোনা হচ্ছে না দেখে নিজেদের গ্রামের স্কুল থেকে ভিন গ্রামের স্কুলে নাম লিখিয়েছে বহু পড়ুয়া।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা ক্যানিং ১ নম্বর ব্লকের ইটখোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যেই পড়ে কৃপা খালি প্রাইমারি স্কুল। ফলে ছাত্রসংখ্যা যথেষ্টই ভাল ছিল কিছুদিন আগেও। কিন্তু স্কুলের পঠন-পাঠনের ঘাটতি আর মিড-ডে মিলের অনিয়মে সমস্যায় পড়েছেন পড়ুয়ারা। দিন দিন কমেই চলেছে পড়ুয়ার সংখ্যা। বর্তমানে পড়ুয়ার সংখ্যা ২৫৬ জন। আর শিক্ষক ৬ জন। হাতেগোনা কয়েকজন পড়ুয়া উপস্থিত হয় স্কুল বন্ধ থাকলেও। সেইসব পড়ুয়াদের এদিনও দেখা গেল স্কুলে। স্থানীয় পড়ুয়াদের অভিযোগ, “শিক্ষকরা এসে স্কুলে ঘুমিয়ে পড়েন। মিড-ডে মিলে যা খাদ্য দেওয়ার কথা তালিকা অনুযায়ী তা আমরা পাই না। কখনও কখনও ভাঙা ডিম দেয় আবার কখনও শুধুই আলুর তরকারি।’
শুধু তাই নয়, আছে পানীয় জলের সমস্যা। পানীয় জলের সমস্যা থাকলেও সরকারি অর্থ থেকে পাওয়া বড় বড় দুটি জলের ট্যাঙ্ক পড়ে আছে মাঠে আর সেখানে পড়ে নষ্ট হচ্ছে ড্রাম গুলি। স্কুলে নলবাহিত জলের ব্যবস্থা করা থাকলেও সেগুলো সবই অচল। জলের জন্য রাস্তার কলে ছুটতে হয় পড়ুয়াদের। টয়লেটের অবস্থাও তথৈবচ। যেগুলি ব্যবহারের অযোগ্য। এই বিষয়ে স্থানীয় অভিভাবক সাজামল মোল্লা, বলেন, “মাঝে মাঝে স্কুল খোলা হয়। পড়াশোনা তেমন হয় না। শিক্ষকরা উপস্থিত থাকেন না স্কুলে। নতুন ভাবে রং করা হলেও যে রং করা হচ্ছে তা নিয়ম মেনে নয়, পুরনো রং না তুলে এবং প্লাস্টার না করে এই রং হচ্ছে। ফলে কয়েক দিনের মধ্যে তা খুলে পড়ে যাবে। সরকারের পয়সার অপব্যবহার হবে।”
অন্যদিকে, গ্রামবাসী নিরাপদ বলেন, “প্রধান শিক্ষক শোভন চক্রবর্তীকে স্কুলে সপ্তাহে একদিনও দেখা যায় না। খাবারের মান খারাপ থাকায় বারবার জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি। স্কুল সময় মতো খোলা হয় না এবং নিয়ম মতো বন্ধ হয় না, ফলে স্কুলছুট বহু ছাত্র-ছাত্রী। গত ১৩ তারিখের পর থেকে আজও স্কুল খোলা হয়নি।” এবিষয়ে জেলা পরিষদের শিক্ষার কর্মাধক্ষ্য প্রকাশ মণ্ডল বলেন, “বিষয়টা কী হয়েছে খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। ”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.