সৈকত মাইতি, তমলুক: মায়ের পুজোর জন্য ১০৮টি পদ্ম পেতে এবার কালঘাম ছুটবে পুজোর উদ্যোক্তাদের। কারণ এবার পদ্মের জোগান বড্ড কম। পদ্মের পাশাপাশি গাঁদা, রজনীগন্ধাও চোখ রাঙাচ্ছে। পূর্ব মেদিনীপুরের ফুলচাষিরা বলছেন এবার পদ্মের দামের কাঁটা ভাল মতো ফুটবে।
[শ্রীলঙ্কা থেকে পুরোহিত এসে পুজো করেন দেবী দুর্গাকে, কেন জানেন?]
ফুল চাষে রাজ্যের মধ্যে দ্বিতীয় পূর্ব মেদিনীপুর। গত জুলাই থেকে টানা নিম্নচাপের বৃষ্টিতে এই জেলার প্রচুর সবজি, ফসলের পাশাপাশি জেলার ফুলচাষেরও বারোটা বেজেছে। তার পাশপাশি দীর্ঘদিন ধরে জেলার ফুলের হিমঘরগুলি বন্ধ। ফলে সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও খামতি থেকে গিয়েছে। এমন অবস্থায় বাজারে ফুলের জোগান কমে যাওয়ায় পুজোর মুখে ফুলের দাম আকাশছোঁয়া হওয়ার আশঙ্কায় ফুলচাষি ও ব্যবসায়ীরা। কয়েক দিন আগে বিশ্বকর্মা পুজোতেই তার ইঙ্গিত মিলেছে। এই প্রবণতায় পরিষ্কার পুজোয় কপালে দুঃখ আছে।
[প্রশাসনের উদ্যোগে পুজোর কেনাকাটা, হাসি ফুটল অনাথ বাচ্চাদের মুখে]
বিশ্বকর্মা পুজোতেই একমাত্র পদ্ম ছাড়া বাকি সমস্ত ফুলের দাম এক লাফে দুই থেকে তিন গুণ বেড়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সব থেকে বড় ফুলের বাজার হিসেবে পরিচিত কোলাঘাট ও দেউলিয়া। সেখানে রজনীগন্ধা প্রতি কেজি ১০০-১২০ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০০-৪৫০ টাকা। ১২০ টাকার বেলফুলও পৌঁছেছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। এদিকে ১০ থেকে ১৫ টাকার ঝুরো গাঁদাফুল ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিকোচ্ছে। ১ টাকার গোলাপ পৌঁছেছে ৩ টাকায়।
[২৫ মাথা, ৫০ হাতের চামুণ্ডা সিউড়ির মহাপুজোর সেরা আকর্ষণ]
বাজারের এই অবস্থা দেখে পোড়খাওয়া চাষিদের ধারণা, পুজোয় ফুলের দাম অনেকটাই বাড়বে। কোলাঘাটের যদুপুরের রাসবিহারী মান্না, মোহন দাস, পাঁশকুড়ার বাজু গ্রামের রঘুবীর দাসের বক্তব্য, এবছর আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তাই স্বাভাবিক ভাবেই ফুলের জোগান অনেকটা কমেছে। তাছাড়া দিন কয়েক আগে পাঁশকুড়ার ফুলের সরকারি হিমঘরটি চালু হলেও চাহিদা মেটানো যায়নি। অনেক ফুলচাষি অপেক্ষা করতে করতে ফুল ফেলে দিয়েছিলেন। ফুল চাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক নারায়ণ নায়েক জানান, ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের সমস্যার নিয়ে তিনি রাজ্যের উদ্যান পালন দপ্তরের মন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তেমন সাড়া মেলেনি। তার ফলে পুজোয় পদ্ম সহ অন্যান্য ফুলের দাম বাড়া একপ্রকার অনিবার্য।
ছবি: রঞ্জন মাইতি
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.