শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: এসএসসি প্যানেল বাতিল সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের রায়ে (SC Verdict On SSC) কোথাও ৫০ শতাংশ, কোনও স্কুলে ৫৬ শতাংশ শিক্ষক চাকরি হারিয়েছেন। বিশ বাঁও জলে বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা। রাতারাতি শিক্ষক-হীন হয়ে পড়লে স্কুলের স্বাভাবিক পঠনপাঠন থমকে যাবে বলে আশঙ্কা পড়ুয়া, অভিভাবকদের। এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা অর্জুনপুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ঘটনা। এখানে ৬৫ জন শিক্ষকের মধ্যে ৩৫ জনেরই চাকরি বাতিল হয়ে গিয়েছে বৃহস্পতিবার, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে। বাতিল হয়েছে চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষাকর্মীর চাকরিও। ৯৫০০ ছাত্রছাত্রীর ভরসা এখন স্রেফ ৩০ জন শিক্ষক, ৭ জন প্যারাটিচার।
ফরাক্কার অন্তত তিনটে স্কুলের পরিস্থিতি এমনই। নিউ ফরাক্কা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৩৪ জন শিক্ষক ছিলেন। তার মধ্যে বৃহস্পতিবার ‘সুপ্রিম’ রায়ে চাকরি গিয়েছে ১১ জনের। তার চেয়েও বড় তথ্য, এই স্কুলের উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ৩ জন শিক্ষক ছিলেন। একজন এডুকেশন, একজন দর্শন ও আরেকজন আরবি। শীর্ষ আদালত ২৬ হাজার শিক্ষকের প্যানেল বাতিল করায় চাকরি গেল তাঁদের দু’জনেরই। চাকরি বহাল থাকছে একমাত্র আরবি শিক্ষকের। ফলে এই স্কুলে এবার থেকে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি কীভাবে চলবে, তা ভেবে মাথায় হাত স্কুল কর্তৃপক্ষের।
ঝাড়খণ্ড লাগোয়া ফরাক্কার বাহাদুরপুর উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলটি মূলত আদিবাসী, সংখ্যালঘু অধ্যুষিত। ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১৬ জন। ৯ শিক্ষক ও ৩ জন প্যারাটিচার ছিলেন এতদিন। আজ, শীর্ষ আদালতের রায়ে বাতিল হল ৪ শিক্ষক ও একজন অশিক্ষক কর্মীর চাকরি। অন্যদিকে, ফরাক্কার একমাত্র মহিলা স্কুল স্বর্ণময়ী বালিকা বিদ্যালয়ের ১৭০০ জন ছাত্রীকে পড়ানোর ভার ছিল দশজন শিক্ষিকার উপর। তার মধ্যে ৫০ শতাংশ অর্থাৎ ৫ জনেরই চাকরি বাতিল হয়েছে। চাকরি খুইয়েছেন এক অশিক্ষক কর্মীও। এসব স্কুলে পড়াশোনার অদূর ভবিষ্যত অন্ধকারে, তা বলাই বাহুল্য। তবে ‘সুপ্রিম’ রায়ে একটি ছাড়ও দেওয়া হয়েছে। আগামী তিনমাসের মধ্যে নতুন করে পরীক্ষার ব্যবস্থা, প্যানেল তৈরি করে শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.