সৌরভ মাজি, বর্ধমান: সাড়ে ৮৪ লক্ষ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ধৃত ব্যাংককর্মী তারক জয়সওয়ালকে জেরা করে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে তদন্তকারীদের কাছে। ব্যাংকে জমা পড়া নগদ টাকা ক্যাশবুকে কয়েন জমা পড়েছে বলে লিপিবদ্ধ করত। আর নগদ টাকা সে সরিয়ে নিত। কয়েন যেহেতু সচরাচর গোনা হয় না তাই এই পন্থা নিয়ে নগদ সরাত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের মেমারির ওই শাখার যুগ্ম ক্যাশ ইনচার্জ তথা ভল্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত তারক। ব্যাংকের অর্থ লোপাটের ঘটনার তদন্তে নেমে এমনটাই জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। তারকের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আরও বেশ কিছু তথ্য উঠে এসেছে বলে জানা গিয়েছে। লটারির টিকিট কাটার নেশা যেমন ছিল তেমনই বর্ধমান শহরের একটি পানশালাতেও তার নিয়মিত যাতায়াত ছিল বলেও তদন্তে উঠে। এসেছে। ব্যাংকে জমা পড়া টাকা সরিয়ে সেই টাকা ফূর্তি করে ওড়াত বলেও প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।
শুক্রবার দিনভর ব্যাংকের ওই শাখায় জেরার পর সন্ধ্যায় তারককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শনিবার তাকে বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়। মামলার তদন্তকারী অফিসার উত্তাল সামন্ত ধৃতকে ৫ দিনের পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করেন। তারকের আইনজীবী অরুণাভ চৌধুরি আদালতে দাবি করেন, তাঁর মক্কেলকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তাঁর মক্কেল অসুস্থ। তার চিকিৎসার প্রয়জোন রয়েছে বলে জানান অরুণাভবাবু। মামলার সরকারি আইনজীবী নারদকুমার ভুঁইয়া আদালতে জানান, ধৃতকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। সিজেএম রতনকুমার গুপ্তা ধৃতের ৩ দিন পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর করেন।
[সাড়ে ৮৪ লক্ষ টাকার কয়েন সরিয়ে গ্রেপ্তার ব্যাংক আধিকারিক]
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত মাসে ব্যাংকের ইন্টারনাল অডিটের সময় সাড়ে ৮৪ লক্ষ টাকার কয়েনের গরমিল ধরা পড়ে। এরপরই গত ২৯ নভেম্বর থেকে ব্যাংকে যাওয়া বন্ধ করে দেয় তারক। গত বৃহস্পতিবার রাতে ব্যাংকের বর্ধমানের আঞ্চলিক আধিকারিক তারকের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। মেমারি থানার পুলিশ ঘটনার তদন্তে নামে। শুক্রবার ব্যাংকে তদন্তে যান পদস্থ পুলিশ আধিকারিকরা। ম্যারাথন জেরায় টাকা হাতানোর কথা স্বীকার করে তারক। তারপরই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিকভাবে তদন্তকারীরা মনে করছেন, আত্মসাতের টাকার বেশিরভাগটাই খরচ করে ফেলেছে তারক। তবে ওই টাকায় কোনও সম্পত্তি কেনা হয়েছে কি না বা অন্য কোথাও তা সরানো হয়েছে কি না তা জানার চেষ্টা চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা।
ছবি: মুকুলেসুর রহমান
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.