দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: ছাব্বিশ দিন ধরে পার্ক সার্কাসে CAA বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়ার পর মঞ্চেই মৃত্যু হয়েছে এক মহিলার। এই ঘটনার পর থেকেই থমথমে গোটা এলাকা। এবার সেই আন্দোলনকারীকে নিয়ে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়ালেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু। আন্দোলনকারী পরিচয় নিয়ে সন্দেহপ্রকাশ করলেন গেরুয়া শিবিরের নেতা। সায়ন্তন বসুর এই মন্তব্যের জেরে রাজনৈতিক মহলে উঠেছে সমালোচনার ঝড়।
জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (CAA) বিরোধিতায় এক্কেবারে অন্যরকম আন্দোলনের দিশা দেখিয়েছিল দিল্লির শাহিনবাগ। মহিলারা তাঁদের সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনে শামিল। সেই পথই অনুসরণ করেন পার্ক সার্কাসের একদল মহিলা। তাঁরা সন্তানদের সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নেন। সেই মঞ্চে আন্দোলনকারীদের দলেই ছিলেন শামিদা খাতুন নামে এন্টালির এক বাসিন্দা। শনিবার রাতেও মঞ্চেই ছিলেন তিনি। রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন শামিদা। শুরু হয় বুকে যন্ত্রণা। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করেন। ওই মহিলাকে নিয়ে যাওয়া হয় চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যালে। চিকিৎসকরা জানান, রাস্তাতেই মৃত্যু হয়েছে বছর সাতান্নর ওই মহিলার।
হুগলির চুঁচুড়ায় সাংবাদিক বৈঠক করে নিহত ওই মহিলার পরিচয় নিয়েই প্রশ্ন তুললেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু। তিনি বলেন, “ওই মহিলা বাংলাদেশি নাকি ভারতীয় আগে সেই খোঁজ নিন। কারণ ওখানে বেশিরভাগ লোকই বাংলাদেশ থেকে এসে বসে আছে। যতই আন্দোলন করুক না কেন CAA’র কোনও পরিবর্তন হবে না। ওইখানে বাংলাদেশ থেকে এসে যারা বসে আছে তাদের আমরা দেশ থেকে তাড়িয়ে দেব।” CAA বিরোধী আন্দোলন প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেন বিজেপি নেতা। তিনি বলেন, “রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাজ বিভ্রান্তি দূর করা। তিনি নিজেই বিভ্রান্তি তৈরি করছেন। আমরা বারবার বলেছি ভারতীয় মুসলমানদের চিন্তার কোনও কারণ নেই। বাংলাদেশি মুসলমান হলে তাঁর উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ রয়েছে। তবে বাংলাদেশি হিন্দুদের কাগজ না দেখেই আমরা নাগরিকত্ব দেব।”
বারবার বিভিন্ন মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছেন সায়ন্তন বসু। এক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম হয়নি। CAA আন্দোলনকারীর মৃত্যু প্রসঙ্গে বিজেপি নেতার মন্তব্য নিয়ে উঠেছে বিতর্কের ঝড়। এভাবে ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়ার বিষয়টিকে মোটেও ভাল চোখে দেখছেন না বিরোধীরা। যদিও নিজের অবস্থানে অনড় গেরুয়া শিবিরের নেতা।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.