অতিমারীতে এদের কেউ হারিয়েছে বাবাকে। কেউ বা মাকে। কেউ কেউ দু’জনকেই হারিয়ে নিঃস্ব, বিপন্ন। এমন শিশুদের পাশে দাঁড়াতেই ‘সংবাদ প্রতিদিন ’ ও ‘ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ’র মানবিক প্রয়াস ‘আদর’। এমন শিশুদের সন্ধান জানাতে পারেন আপনিও। যোগাযোগ করুন ৯০৮৮০৫০০৪৮ নম্বরে।
অভিরূপ দাস: দিন দশেকের জ্বর, সঙ্গে শ্বাসকষ্ট। তাতেই সব শেষ। না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন সঞ্জীব মণ্ডল। বাড়িতে কান্নার রোল। কিন্তু দু’বছরের ছেলে দৃশান তো জানেই না, পিতৃবিয়োগ কাকে বলে! সারাদিন হাসছে, খেলছে। আর একরত্তির মুখ দেখে ক্ষণে ক্ষণে শিউরে উঠছেন মা শুভশ্রী। সংসারটা এবার চলবে কী করে? স্বামীই যে ছিলেন একমাত্র রোজগেরে।
পশ্চিম মেদিনীপুরের (Paschim Medinipur) শুভশ্রী নিয়োগী (৩১)-র সঙ্গে বর্ধমানের সঞ্জীব মণ্ডলের বিয়ে হয় বছরখানেক আগে। বিয়ের পর ওঁরা দিল্লি (Delhi) চলে যান, সেখানেই একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কাজ করতেন সঞ্জীব। ভিনরাজ্যে কাজ জুটিয়েছিলেন শুভশ্রীও। গর্ভে সন্তান এলে তাকে দেখভালের জন্যেই চাকরি ছাড়তে বাধ্য হন শুভশ্রী। স্বামীর রোজগারে চলে যাচ্ছিল।
২০১৯ সালে পুত্রসন্তানের জন্ম। তখনও অতিমারী প্রবেশ করেনি দেশ তথা বাংলায়। করোনার প্রথম তরঙ্গে ভয়ে ভয়ে ছিল মণ্ডল পরিবার। অফিসের কাজে প্রায়ই বেরোতে হত সঞ্জীবকে। প্রথম তরঙ্গ কাটিয়ে দেওয়া গেলেও বাদ সাধল দ্বিতীয় ঢেউ। এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে করোনা (Corona Virus) আক্রান্ত হন সঞ্জীব। প্রথমে বাড়িতেই ছিলেন। অক্সিজেন স্যাচুরেশন তলানিতে নেমে যাওয়ায় ভর্তি করা হয় দিল্লিরই এক বেসরকারি হাসপাতালে। দিন দশেকের চিকিৎসায় জলের মতো টাকা খরচ। “তবু যদি মানুষটাকে বাঁচাতে পারতাম কষ্ট হত না।” জানিয়েছেন শুভশ্রী।
৪ মে মারা যান সঞ্জীব। মাত্র একত্রিশে সধবার চিহ্ন মুছে যায় শুভশ্রীর কপাল থেকে।জমানো সমস্ত টাকাও ততদিনে সঞ্জীবের চিকিৎসায় নিঃশেষিত। গুরগাঁওয়ে ভাড়াবাড়িতে মোটা টাকা খরচ। ছেলের হাত ধরে শ্বশুরবাড়িতে ফিরে আসেন শুভশ্রী। তখনও জানা ছিল না, সেখানে ‘অদ্ভুত ব্যবহার’ অপেক্ষা করে আছে তার জন্য। দরজা থেকেই তাঁকে বিদায় করে দেন শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। শুভশ্রীর কথায়, “আমাকে তো বটেই, ওইটুকু ছেলেটাকেও একবার কাছে ডাকল না ওরা। ঠারেঠোরে ওরা জানিয়ে দিল, ওই বাড়ির দরজা আমার জন্য চিরকালের জন্য বন্ধ।”
অগত্যা পশ্চিম মেদিনীপুরের রামজীবনপুরে বাপের বাড়িতেই ফিরে এসেছেন শুভশ্রী। নড়বড়ে সে সংসারের ভরসা শুভশ্রীর বৃদ্ধ বাবা। তাঁর একটি ছোট্ট দোকান। এদিকে ছেলেকে পড়াশোনা শেখাতে অর্থের প্রয়োজন। কাজ খুঁজছেন শুভশ্রী। করোনায় অর্থনৈতিক মন্দা চরমে। একাধিক অফিসে লোক ছাঁটাই। এমন অবস্থায় কাজ পাওয়াও যে দুষ্কর। শুভশ্রীর কথায়, “আমার স্বামীর স্বপ্ন ছিল ছেলেকে পড়াশোনা শিখিয়ে বড় করে তুলবে। আজ এমন জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছি কীভাবে সংসার চলবে জানি না।”
এই সবহারানো অসহায় শিশুদের পাশে দাঁড়াতে পারেন আপনিও। সরাসরি অর্থসাহায্য পাঠানো যাবে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের অ্যাকাউন্টে।
State Bank of India, Ballygunge Branch,
A/C No : 30391077575
IFS Code : SBIN0003951
Mobile : 9433607740 (Debashish Maharaj)
বিঃদ্র: টাকা পাঠানোর পর আপনার নাম,ঠিকানা ও সাহায্যের পরিমাণ স্ক্রিনশট সহ হোয়াটসঅ্যাপ করুন 9433607740 ও 9088050048 নম্বরে। আমরা যথাসময়ে তা প্রকাশ করব। সাহায্যকৃত অর্থ 80G ধারা অনুযায়ী করমুক্ত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.