Advertisement
Advertisement
মানবিক বিডিও

আর্তকে কোলে তুলে নিজের খরচে চিকিৎসা, মানবিকতার নজির রায়নার বিডিও’র

সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্ট চোখে পড়তেই ছুটে যান বিডিও।

Salute! Burdwan BDO comes to the aid of ailing woman
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:October 21, 2019 2:50 pm
  • Updated:October 21, 2019 2:50 pm  

সৌরভ মাজি, বর্ধমান: সোশ্যাল মিডিয়ার গ্রুপে একটা বার্তা। চিকিৎসা করাতে না পেরে শয্যাশায়ী এক মহিলা। তা চোখে পড়তেই বিডিও সটান গিয়ে হাজির সংকটাপন্ন মহিলার বাড়িতে। নিজে তাঁকে কোলে করে তুলে, পকেটের টাকা খরচ করে চিকিৎসা করালেন। কিনে দিলেন ওষুধ। সাময়িকভাবে কিছু খাবারদাবারের ব্যবস্থাও করলেন। মহিলার পরিবার যাতে সরকারিভাবে সহায়তা পায়, তারও ব্যবস্থা করে তবে ফিরলেন। রবিবার, ছুটির দিনে নিজের কর্মক্ষেত্রের বাইরে গিয়ে এভাবেই একজন আদর্শ মানুষ হিসেবে নিজেকে চেনালেন পূর্ব বর্ধমানের রায়না-১ ব্লকের বিডিও সৌমেন বণিক। একাজে অবশ্য তিনি পাশে পেয়েছেন আরও কয়েকজন মানবদরদীকে।

[ আরও পড়ুন: নিমতাকাণ্ডে প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য, জোরাল হচ্ছে দেবাঞ্জনের বান্ধবী যোগ]

বলা হয়, জনগণ এবং প্রশাসনের মধ্যে একেবারে তৃণমূল স্তরের যোগসূত্রটি স্থাপন করেন বিডিওরা। রায়না ১-এর এই ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক যেন সেকথাই একেবারে হাতেকলমে প্রমাণ করে দিলেন। বিডিও সৌমেন বণিকের এমন মানবদরদী কাজের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সকলেই। এমন উপকার পেয়ে আর্ত মহিলা ও তাঁর মা দুই হাত তুলে আশীর্বাদ করছেন এই তরুণ বিডিওকে। একইসঙ্গে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন, তাঁর সঙ্গী সৌভিক ঘোষ, অনাবিল সেনগুপ্ত-সহ কয়েকজনকে।
বর্ধমান শহরের ছোটনীলপুরের মালির মাঠের চন্দনা নন্দী। বছর বিয়াল্লিশের চন্দনাদেবী ইতিহাসে এমএ করেছেন। প্রাইভেট টিউশনি করে ষাটোর্ধ্ব মা’কে নিয়ে ছোট্ট বাড়িতে থাকেন। সম্প্রতি তিনি দুর্ঘটনায় গুরুতর আঘাত পান। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার স্পেশ্যালিটি উইং অনাময় হাসপাতালে ভরতি ছিলেন। সেই সময় রায়নারই এক বাসিন্দা তাঁদের খুবই সাহায্য করেছিলেন। এমনকী হাসপাতাল থেকে তাঁকে বাড়িতেও পৌঁছে দিয়ে যান সেই ভদ্রলোক। কিন্তু তারপর থেকে চন্দনা দেবী কার্যত শয্যাশায়ী। যন্ত্রণা বাড়লেও ডাক্তারের কাছে যেতে পারছিলেন না। কারও সহযোগিতা পাচ্ছিলেন না।
এমনই কঠিন অবস্থার মধ্যে দিয়ে যখন দিনযাপন করছেন চন্দনাদেবী, তখনই যেন দেবদূতের মতো উদয় হলেন এলাকারই বাসিন্দা সৌভিক ঘোষ। তিনি মন্তেশ্বর বিডিও অফিসের কর্মী। চন্দনাদেবীর মাকে কান্নাকাটি করতে দেখে তিনি এগিয়ে যান। সব শুনে বিষয়টি তাঁর সহকর্মী তথা বন্ধু অনাবিল সেনগুপ্তকে জানান। অনাবিলবাবু তা সোশ্যাল মিডিয়ার একটি গ্রুপে পোস্ট করেন। আর সেটাই চোখে পড়ে বিডিও সৌমেন বণিকের।তিনি রবিবার সকালেই ছুটে যান ওই মহিলার বাড়িতে।তারপর কোলে করে চন্দনাদেবীকে তুলে নিয়ে সোজা পৌঁছে যান এক চিকিৎসকের চেম্বারে। সেখানে চিকিৎসা করিয়ে সবরকম ওষুধপত্র কিনে দেন বিডিও। একটি ওয়াকারও কিনে দেওয়া হয়। যাতে কারও সাহায্য ছাড়াই তিনি হাঁটতে পারেন।

Advertisement

[ আরও পড়ুন: তৃণমূলকে রাজ্য থেকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করার হুঁশিয়ারি রূপার]

সৌভিকবাবু বলেন, “ওই মহিলার মাকে রাস্তায় কান্নাকাটি করছে দেখে জানতে পারি কাপাসিবাবু নামে কারও সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন তাঁরা। কিন্তু পাচ্ছেন না মোবাইলে। হাসপাতালে ভর্তি থাকার সময় ওই কাপাসিবাবু খুব সহায়তা করেছিলেন তাঁদের। এদিন বিডিও সাহেব নিজের পকেটের টাকায় সব ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।” সূত্রের খবর, আর্তর সেবায় ৫ হাজার টাকারও বেশি খরচ করেছেন বিডিও সৌমেন বণিক। তিনি বলছেন, “রাতে খবরটা পেয়েছিলাম। সকালে গিয়ে মহিলাকে সহায়তা করা হয়েছে।” আরও জানা গিয়েছে, বর্ধমান পুরসভার সঙ্গে কথা বলে চন্দনাদেবীর পরিবারের জন্য ত্রাণের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি, জেলা সমাজ কল্যাণ আধিকারিকের সঙ্গেও এই বিষয়ে কথা বলে সহায়তা করা হচ্ছে। আর চন্দনাদেবী বলছেন, “ওঁদের উপকার কোনওদিনও ভুলব না।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement