সম্যক খান, মেদিনীপুর: এগরার বিধায়ক সমরেশ দাসের মতো এবার শোকজ হতে চলেছেন শালবনীর বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো। বিজেপি সাংসদ কুনার হেমব্রমের সঙ্গে একমঞ্চে থাকার অপরাধে তাকে শোকজ করতে চলেছে তৃণমূল। জেলা তৃণমূল সভাপতি অজিত মাইতি বলেছেন, গর্হিত কাজ করেছেন বিধায়ক। দলের নির্দেশের বাইরে গিয়ে বিজেপি নেতাদের সঙ্গে মঞ্চ শেয়ার করেছেন। বিষয়টিকে দল ভালভাবে দেখছে না। শোকজ করা হবে শ্রীকান্ত মাহাতোকে। যদিও বিধায়ক শ্রীকান্তবাবু নিজে জানিয়েছেন, স্কুলের একটি অনুষ্ঠানে তিনি হাজির হয়েছিলেন। তিনি জানতেন না যে ওখানে বিজেপি সাংসদ কুনার হেমব্রমকেও ডাকা হয়েছে। তাহলে তিনি যেতেনই না। তবে তাঁর দাবি কুনারবাবু মঞ্চে হাজির হতেই তিনি সেখান থেকে চলে গিয়েছিলেন।
শ্রীকান্তবাবু মঞ্চ থেকে নামার আগেই অবশ্য মোবাইলের দৌলতে আলোকচিত্রীদের ক্যানভাসে ধরা পড়ে গিয়েছেন তিনি। আর সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপের দৌলতে তা পৌঁছেও যায় মানুষের হাতে হাতে। উল্লেখ করা যেতে পারে গোয়ালতোড়ের কালাবতী পেড়ুয়াবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করেই ওই বিতর্ক দেখা দিয়েছে। শনিবার দুপুরে ছিল উদ্বোধন অনুষ্ঠান। সেখানেই একমঞ্চে দেখা গিয়েছে ঝাড়গ্রামের সাংসদ কুনার হেমব্রম ও শালবনীর বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতোকে। উদ্যোক্তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে বেলা বারোটা নাগাদই স্কুলের অনুষ্ঠানমঞ্চে পৌঁছে যান সাংসদ। তার কিছুক্ষণ পরে আসেন বিধায়ক শ্রীকান্ত।
তবে বেশিক্ষণ একসঙ্গে থাকেননি। মঞ্চে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু করতে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের জন্য দুজনের ডাক পড়তেই ভিরমি খান শ্রীকান্ত। একসঙ্গে অবশ্য প্রদীপ প্রজ্জ্বলনে অংশ নেননি। তার আগেই নেমে নিজের গাড়িতে বসে সেখান থেকে সরে পড়েন তিনি। স্কুল কর্তৃপক্ষও পড়ে যায় বেজায় অস্বস্তিতে। তারা তাড়াতাড়ি কুনারবাবুকে সংবর্ধনা দিয়ে বক্তব্য রাখতে বলে দেন। বক্তব্য রাখা শেষ হলে তড়িঘড়ি তাকে খাইয়ে দাইয়ে বিদায় দিয়ে দেন উদ্যোক্তারা। কুনারবাবু চলে যাওয়ার বেশ কিছুক্ষণ পর ফের মঞ্চে আসেন শ্রীকান্তবাবু। তারপর যথারীতি তিনি ভাষণও দেন।
কুনারবাবু বলেছেন, মুখে সৌজন্যতা ও সংস্কৃতির কথা বললেও বিন্দুমাত্র সৌজন্য ছিল না বিধায়কের আচরণে। শিক্ষাকেন্দ্রের আঙিনায় পড়ুয়াদের কাছে ন্যক্কারজনক রাজনীতি তুলে ধরছে তৃণমূল। যা চরম শিষ্টাচার বিরোধী। অপরদিকে শোকজের মুখে পড়া বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো বলেছেন, তিনি দলের শৃঙ্খলাপরায়ণ সৈনিক। তিনি জানতেনই না যে বিজেপির সাংসদ সেখানে আসছেন। জানলে তিনি ওই পথ মাড়াতেন না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.