স্টাফ রিপোর্টার: গতবছর ইজরায়েল বেড়াতে গিয়েছিলেন সাঁইথিয়ার অরুণ সারদা৷ অনেক কিছু ঘুরে দেখলেও মনে লেগে গিয়েছিল জমিতে অভিনব কায়দায় সেচ পদ্ধতি৷ তখন থেকেই তাঁর মনে ঘুরপাক খাচ্ছিল, কী করে নিজের জমিতে এই সেচ পদ্ধতি প্রয়োগ করবেন৷ বাড়ি ফিরে প্রস্তুতি শুরু করে দিলেন৷ পুরো জমি প্লাস্টিকের আচ্ছাদনে ঢেকে গাছের গোড়ায় পাইপ লাইনের মাধ্যমে জল পৌঁছে দেওয়া৷ এইভাবেই একরের পর একর জমিতে ফলিয়েছেন কলা, ক্যাপসিকাম, টম্যাটো, পেঁপে, ফুলকপি, বাঁধাকপি৷ আর এই বিশেষ পদ্ধতিতে চাষ দেখতে সাঁইথিয়ার কৃষকরা তো বটেই, কৃষি দফতরের আধিকারিকরাও ভিড় জমাচ্ছেন অরুণ সারদার জমিতে৷
অরুণবাবু জানান, গোটা জমিটাকে প্রথমে পলিথিন দিয়ে মুড়ে ফেলতে হবে৷ নির্দিষ্ট দূরত্বে চারা গাছ বসানোর জন্য ফাঁক রাখতে হবে৷ প্রতিটি গাছের গোড়ায় পাইপের মাধ্যমে একটি করে ফুটোয় জল পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে৷ প্রতিদিন সকালে আধঘণ্টা করে মেশিন চালিয়ে পাইপ লাইনে জল ছাড়লে গাছের গোড়ায় জল পৌঁছবে৷ তাতে পুরো জমি জলে ভেজানোর প্রয়োজন নেই৷ অল্প জলেই চাষ করা যাবে৷ তাঁর বক্তব্য, আলু ও ধানের দাম না পেয়ে এ বছরই এই পদ্ধতিতে চাষ করা শুরু করেছেন৷ এবার বাইশশো কলা গাছের চারা বসিয়েছেন তিনি৷ লাগিয়েছেন দেড় হাজার পেঁপের চারা, কয়েক হাজার কপিও৷
অরুণের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, মাঠ ঢাকতে যে পলিথিনের চাদর ব্যবহার করছেন, তা কারখানায় বরাত দিয়ে তৈরি করিয়েছেন৷ কলার চারা এনেছেন গুজরাট থেকে৷ এই অভিনব পদ্ধতিতে চাষ দেখতে প্রচুর চাষি ভিড় করলেও জেলা কৃষি দফতরের মতে, অরুণ স্বচ্ছল পরিবারের হওয়ায় এভাবে ব্যয়বহুল পদ্ধতিতে চাষ করা সম্ভব হচ্ছে৷ যা সব কৃষকের পক্ষে সম্ভব নয়।
তবে এই ধরনের চাষ নতুন দিশা দেখাবে৷ জেলা কৃষি সহ-অধিকর্তা অমর মণ্ডল বলেন, এই ধরনের চাষ দেশের খুব কমজনই করেন৷ কারণ বিশেষ ফসল ছাড়া এই চাষ সম্ভব নয়৷ এই পদ্ধতিতে জমিতে মজুত জল বাতাসে উড়ে যায় না, জমিতে আগাছা জন্মায় না৷ মাটি ঢাকা থাকায় রোগের আক্রমণও কম হয়৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.