দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: শুধু লোক ঠকানো নয়, ডাকাতি-নকল সোনা বিক্রি-রাহাজানির মতো কুকীর্তির সঙ্গে জড়িত কুলতলির সাদ্দাম সর্দার। শুধু তাই নয়, এর আগে তিন-তিনবার পুলিশের উপর হামলা চালিয়েছিল সে। ধীরে ধীরে প্রকাশ্যে আসছে কুলতলির সাদ্দামের একের পর এক কুকীর্তি। সেই তথ্য সামনে আসতেই প্রশ্ন উঠছে স্থানীয় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে। প্রায় দেড় দশক ধরে কুকীর্তি চালিয়ে গেলেও পুলিশ কেন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি? কীভাবে সবার চোখ এড়িয়ে বাড়ির নিচে সুড়ঙ্গ তৈরি করল সাদ্দাম? কীভাবেই বা পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে চম্পট দিল সে? প্রশ্ন অনেক, উত্তর এখনও অধরাই।
সোমবার থেকে চর্চায় কুলতলির সাদ্দাম সর্দার। তাকে ধরতে অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ। জানা গিয়েছে, গত ১৫ বছর ধরে নকল সোনা বিক্রির ব্যবসা করত সে। সোশাল মিডিয়ায় লোকজনকে ভুয়ো সোনার মূর্তি বিক্রির টোপ দিত। টার্গেট ছিল ব্যবসায়ীরা। কিন্তু তাদের মূর্তি বিক্রি করা হতো না। উলটে টাকা হাতিয়ে নিত। এমনই অভিযোগ। প্রায় ১২ লক্ষ টাকার প্রতারণার দায়ে অভিযুক্ত সাদ্দাম। এছাড়াও ডাকাতি, রাহাজানি-সহ একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে তার বিরুদ্ধে।
জানা গিয়েছে, বছর কয়েক আগে ওই এলাকায় এক ব্যবসায়ীর দেহ উদ্ধার হয়েছিল। মনে করা হচ্ছিল, মূর্তি কিনতেই এসেছিলেন তিনি। কিন্তু প্রাণ নিয়ে আর ফিরতে পারেননি। এর নেপথ্যে সাদ্দাম ছিল বলেই মনে করা হয়েছিল। পুলিশের উপর বার বার হামলা চালিয়েছিল সে। এমনও অভিযোগ রয়েছে। সাদ্দামের খাটের নিচের সুড়ঙ্গ সোজা মিশেছে মাতলা নদীর কাঁকড়া খালে। যার একদিকে জয়নগরের বকুলতলা থানা, অন্য পাশে কুলতলি। খালে পৌঁছতে ট্রে-র ধরনের নৌকার ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। তাতে চেপেই পালিয়েছে সে।
গতকালের ঘটনায় সাদ্দামের পরিবারের দুই মহিলা সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। এদিন তাদের আদালতে তোলা হয়েছে। ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতে চাওয়া হয়েছে। তাদের হেফাজতে নিয়ে বহু রহস্যের জট খুলতে চায় পুলিশ।কবে থেকে বাড়ির নিচে সুড়ঙ্গ তৈরি হচ্ছিল? কোন উদ্দেশে তৈরি হয়েছিল এই গোপন পথ? কী কী কাজ চলত এই গোপন পথে? ধৃত দুজনকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে এ বিষয়গুলি থেকে জানতে চাইবে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.