সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কোথাও মজে গিয়েছে, আবার কোথাও নদী কেবল চিহ্নমাত্র৷ দূষণের কবলে অস্তিত্ব সংকটে ইছামতী৷ মৃতপ্রায় নদী ভাবাচ্ছে তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের৷ তবে নদীকে বাঁচাতে উদ্যোগ নেননি কেউই৷ সেখানে ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ নিয়ে নদী বাঁচানোর আন্দোলনে পথে নামলেন নদিয়ার সাবর্ণ সরস্বতী৷
নদিয়ায় ইছামতীর তীরের ছোট্ট গ্রাম দত্তপুলিয়াতেই বেড়ে ওঠা সাবর্ণ সরস্বতীর৷ জন্ম থেকেই নদী দেখেই অভ্যস্ত সে৷ ছোটবেলায় খরস্রোতা ইছামতী বড় টানত তাঁকে৷ কিন্তু ২০০০ সাল থেকে এল পরিবর্তন৷ বন্যায় ভেসে গিয়েছিল চতুর্দিক৷ ব্যস, তারপর থেকেই চরিত্র বদলাতে শুরু করে নদীর৷ অধিকাংশই মজে গিয়েছে ইছামতীর৷ ভরা বর্ষাতেও যেন আগের মতো গতি খুঁজে পায় না নদী৷ দিন যত এগোচ্ছে ততই দূষণের পরিমাণও বাড়ছে ইছামতীতে৷ নদীতে থাকা মাছের মৃত্যু হচ্ছে প্রতিদিন৷ স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে জল পানের ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে৷
নদীর এই বদল বড় ভাবায় সাবর্ণকে৷ কীভাবে আবারও ইছামতীকে আগের রূপে ফেরানো যায়, সেই ভাবনাচিন্তা করতে শুরু করেন ওই যুবক৷ কিন্তু একা কী আর সে কাজ সম্ভব? মৃতপ্রায় ইছামতীকে বাঁচাতে তাই পথে নামার সিদ্ধান্ত নেন সাবর্ণ৷ স্থানীয়দের জড়ো করতে না পারলে ইছামতীকে বাঁচানো যাবে না বলে বুঝতে পারেন তিনি৷ তাই উত্তর ২৪ পরগনা থেকে নদিয়া পর্যন্ত প্রায় ১৩০ কিলোমিটার রাস্তা পরিক্রম করেন সাবর্ণ৷ স্থানীয় মানুষের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করেন৷ ওই যুবকের দাবি, অন্তত ৩০ হাজার মানুষ ইছামতীর উপর নির্ভরশীল৷ মৃতপ্রায় ইছামতীর জেরে সমস্যায় পড়েছেন তাঁরা৷ তাই সাবর্ণের বক্তব্য, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নদীকে পুনর্জীবন দানের বন্দোবস্ত করা হোক৷
পরিবেশ দপ্তরে ইছামতীর সঙ্গীন অবস্থার কথা জানান সাবর্ণ৷ তবে অভিযোগ, বছরদুয়েক কেটে গেলেও লাভ কিছুই হয়নি৷ পরিবেশ দপ্তর ইছামতীকে বাঁচাতে এখনও উদ্যোগ নেয়নি৷ তবে দমে যাওয়ার পাত্র নন সাবর্ণ৷ বাধ্য হয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে আপাতত ইছামতীকে জীবনদানের কাজ শুরু করেছেন তরতাজা তরুণ৷ তবে মৃতপ্রায় নদীকে বাঁচাতে সরকারি সাহায্য না মিললে আন্দোলনে নামারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.