সুব্রত বিশ্বাস: রেলে নারীশক্তিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগেই। চালক থেকে গার্ডের দায়িত্বে দেখা মিলেছে প্রমীলাদের। এবার রেল পুলিশের (জিআরপি) প্রথম মহিলা ওসির দায়িত্বে রাজ্য পুলিশের অফিসার রুপসীনা পারভীন। তাঁকে শুক্রবার বনগাঁ রেল পুলিশের ওসির দায়িত্ব দেওয়া হল। হাওড়া, শিয়ালদহ, শিলিগুড়ি জিআরপির কোনও থানায় আজ পর্যন্ত মহিলা আধিকারিককে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।
এই বিষয়ে রেল পুলিশের আইজি বাসব দাশগুপ্ত বলেন, “এখন নারী-পুরুষ প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল। আলাদা করার কোনও উপায় নেই। দায়িত্ব পেয়েছেন থানা পরিচালনা করতে পারবেন নিশ্চয়।” রুপসীনা পারভীন অবশ্য আশাবাদী। সীমান্ত এলাকার জিআরপির এই দায়িত্ব সামলাতে তাঁর মূল অস্ত্র ভালবাসা। যাত্রীদের সঙ্গে ভাল আচরণ, জেলা পুলিশের সহযোগিতাতেই তিনি গুরু দায়িত্ব সামলাবেন বলে মনে করেছেন।
২০০৮ সালে পিএসসির নির্বাচিত মহিলা এসআই তিনি। হাওড়া, বারাসাতে এসআই পদে কাজ করার পর বনগাঁ তে একেবারে ওসির দায়িত্বে আসা রুপসীনার কথায়, পুলিশের চাকরিতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা ছিলই। প্রথম বছর সব কিছুতে পাশ করার পর উচ্চতার মানদণ্ডে উত্তীর্ণ না হলেও মনোবল ভাঙেনি তাঁর। পরের বছর আবার একই পদের জন্য লড়াই করেন তিনি। উচ্চতা বাড়ানোর জন্য কসরৎতো ছিলই। জেদের কাছে হার মানতে বাধ্য হয়েছিল উচ্চতার প্রতিবন্ধকতা। এক বছরেই বেড়ে যায় উচ্চতা। সফলতা সব ক্ষেত্রে পেয়ে যাওয়ায় একেবারে সরাসরি এসআই পদে যোগ দেন তিনি।
এদিকে, সীমান্ত এলাকায় থানা সমলাতে হবে এজন্য মানসিক প্রস্তুতির দরকার নেই বলে মনে করছেন রুপসীনা পারভীন। গোবরডাঙায় তাঁর পৈতৃক বাড়ি। শ্বশুরবাড়ি গেড়াপোঁতায়। নিজে বারাসাতে থাকলেও এখন স্থায়ীভাবে পরিবারের সঙ্গে বনগাঁতেই থাকবেন তিনি। হাবাড়া চৈতণ্য কলেজের স্নাতক ও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাণিজ্যে স্নাতোকোত্তর ডিগ্রি নেন। মানুষের সেবাতে নিজেকে কাজে লাগাতে চেয়েছেন বরাবর। তাই সংসার আর কর্মস্থলের ভেদ স্পষ্ট নয় তাঁর কাছে। দুটোতেই খুঁজে পান বাঁচার রসদ। তাই দায়িত্ব সামলাতে কোনও অসুবিধাই হবে না বলে তিনি মনে করেছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.