নিজস্ব সংবাদদাতা, রায়গঞ্জ: করোনায় (Corona Virus) মৃতদের দাহ করা হবে রায়গঞ্জের ২২ নম্বর ওয়ার্ডের শ্মশানে। বিদ্যুতের বেগে শুক্রবার সন্ধেয় এই খবর ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা এলাকায়। এরপরই সংক্রমণের আতঙ্ক দানা বাঁধে স্থানীয়দের মনে। ওই শ্মশানে করোনা আক্রান্তদের দাহের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাস্তা অবরুদ্ধ করে হাতে লাঠিসোটা নিয়ে সারারাত শ্মশান পাহারা দেন সন্ত্রস্ত মহিলা-সহ গ্রামবাসীরা। শনিবার পুলিশের উপস্থিতিতে নিয়ন্ত্রণে আসে পরিস্থিতি।
রায়গঞ্জের ২২ নম্বর ওয়ার্ডে আতঙ্কের সুত্রপাত শুক্রবার সন্ধ্যেয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের তরফে তাঁদের জানানো হয়েছিল যে করোনায় মৃতদের দেহ দাহ করা হবে ওই এলাকার শ্মশানে। এই খবর মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। আতঙ্কে একত্রিত হয়ে স্থানীয়রা শ্মশানে ঢোকার প্রধান রাস্তার বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে গাছের গুড়ি আর বাঁশ দিয়ে অবরুদ্ধ করে দেন। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার গোটা দিন চলে অবরোধ।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। বিভোক্ষকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন তাঁরা। দীর্ঘক্ষণ পর স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি। স্থানীয়দের কথায়, শুক্রবার প্রশাসনের লোকজন শ্মশানে জানিয়েছে যে, করোনায় মৃত ব্যক্তিদের ওখানেই দাহ করা হবে। কিন্তু ওই শ্মশানে করোনায় মৃতদের দাহ করতে দিতে নারাজ তাঁরা। রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের করোনা আক্রান্তদের নানা বর্জ্য পদার্থ ওই শ্মশান এলাকায় জমা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তাঁরা। আশঙ্কা প্রকাশ করেন সংক্রমণের।
২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তপন দাস বলেন, “আসলে করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হলে তাঁকে কোথায় দাহ করা হবে সেই বিষয়ে শুক্রবার বিকেলে শ্মশান পরিদর্শনে গিয়েছিলেন এসডিও, পুর চেয়ারম্যান ও থানার আইসি। কুলিক নদীর পাড়ের শ্মশান-সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন তাঁরা। এতেই ভুল বুঝে বাসিন্দারা অবরোধ শুরু করে দেন, বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।” অন্যদিকে রায়গঞ্জ মহকুমাশাসক অর্ঘ্য ঘোষ বলেন, “নিছক গুজব ছড়ানো হচ্ছে। গতকাল পুর চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমিও শ্মশান পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। আসলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে যদি মৃত্যু হয়, তাহলে শ্মশানে দাহ করার নির্দিষ্ট জায়গা চিহ্নিত করার কাজ চলছে। সমস্ত ব্যবস্থা আগে থেকেই প্রস্তুতি প্রয়োজন। সেই কারণে বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করা হয়। কিন্তু বাসিন্দাদের সঙ্গে কোনও আলোচনা বা সিদ্ধান্ত কিছুই হয়নি।” রায়গঞ্জ পুরসভার চেয়ারম্যান সন্দীপ বিশ্বাস বলেন, “বাসিন্দাদের কোন সমস্যা যাতে না হয়, সেইদিকে খেয়াল রেখেই যাবতীয় কাজ করা হবে। কিন্তু তাই বলে গুজব ছড়িয়ে বাসিন্দাদের মধ্যে অহেতুক আতঙ্ক সৃষ্টিকারীদের চিহ্নিত করতে পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।” রায়গঞ্জের পুলিশ সুপার বলেন, “পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক। শ্মশান এলাকায় পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.