জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: মারণ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে চলছে লকডাউন। মাঠের ফসল মাঠেই নষ্ট হচ্ছে। মরার উপর খাঁড়ার ঘা দিচ্ছে যখনতখন কালবৈশাখী, বৃষ্টি। তা থেকে ফসল বাঁচাতে হলে এখনই তুলে ফেলা প্রয়োজন। কিন্তু লকডাউনে শ্রমিক, দিনমজুরদের দেখা নেই। একা হাতে মাঠের ফসল তুলতে না পেরে অসহায় ভাগচাষি পরিবারগুলি। এই পরিস্থিতিতে তাঁদের ত্রাতা হয়ে দাঁড়াল বনগাঁর চাঁদা এলাকার আরএসএস সদস্যরা। সংখ্যালঘু চাষিদের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে ফসল তোলার কাজ শুরু করলেন তাঁরা। মিলল সহজ সমাধান।
বনগাঁ থানা অন্তর্গত গাঁড়াপোতা এলাকার ভাগচাষি আলম মণ্ডল ধান কেটে ছিলেন বৃষ্টির আগে। আজকাল প্রায় রোজ বৃষ্টির জেরে মাঠেই জলে ভিজছে পাকা ধান। কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না তিনি। এই অসহায় অবস্থা দেখে আলম মণ্ডলের পাশে দাঁড়িয়েছেন স্বয়ংসেবকরা। মাঠের জলে নেমে সেখান থেকে তাঁকে ধান তুলে দেন আরএসএস সদস্যরা। গত দু, তিনদিন ধরে একইভাবে এলাকার সংখ্যালঘু চাষিদের পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতা করছেন তাঁরা। সংঘের পোশাকেই বনগাঁ গ্রামীণ খণ্ডের স্বয়ংসেবক বিশ্বজিৎ গাইন, গোবিন্দ বিশ্বাস, ভবতোষ বিশ্বাস, প্রশান্ত মণ্ডল, অর্জুন বিশ্বাস, প্রবীর সরকাররা মাঠের কাজে চাষিদের সঙ্গে হাত লাগিয়ে ফসল ঘরে তুলতে সাহায্য করছেন।
শনিবার মাঠে কাজ করতে করতেই বনগাঁ গ্রামীণ খণ্ডের অন্যতম স্বয়ংসেবক বিশ্বজিৎ গাইন জানান, “কয়েকজন ভাগচাষি দিনমজুরের অভাবে ধান কেটে বাড়ি নিতে পারছিল না। এই খবর পেয়েছিলাম। তাই তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে একটু সহযোগিতা কবার চেষ্টা করেছি।” RSS সদস্য তথা বিজেপি নেতা গোবিন্দ বিশ্বাস বলেন, “চাষিরা এসে বলেন যে লকডাউনের ফলে এলাকায় দিনমজুর পাওয়া যাচ্ছে না। ওদের কাছে নগদ টাকাও নেই। তাই আমরা, স্বয়ংসেবকরা ওদের পাশে দাঁড়িয়েছি। বিপদের সময় জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে মানুষের পাশে দাঁড়ানোটাই আমাদের কাজ।” এমন দুর্দিনে দিনে কট্টর হিন্দুত্ববাদী আরএসএস সদস্যদের এভাবে নিজেদের পাশে পেয়ে খুশি মুসলিম চাষিরা। খুশি সেখানকার সাধারণ মানুষজনও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.