সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসের খুনে মূল অভিযুক্ত হিসেবে নাম উঠে আসা অভিজিৎ পুণ্ডারি আরএসএসের সক্রিয় সদস্য। কৃষ্ণগঞ্জে গিয়ে এমনই অভিযোগ তুললেন যুব তৃণমূল সভাপতি তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পূর্ব ঘোষণা মতো সোমবার বেলায় কৃষ্ণগঞ্জে পৌঁছান অভিষেক। হাঁসখালির মাঠে নিহত তরুণ বিধায়কের ছবিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা জানান। এরপর তিনি পৌঁছে যান সত্যজিৎ বিশ্বাসের বাড়িতে। স্ত্রী এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। অভিষেকের সঙ্গে ছিলেন দলের আরেক তরুণ বিধায়ক, শান্তিপুরের অরিন্দম ভট্টাচার্য।
বিধায়ক খুনের প্রতিবাদে রেল অবরোধ, ভোগান্তি নিত্যযাত্রীদের
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তৃণমূল যুব সভাপতির স্পষ্ট অভিযোগ, ‘সত্যজিৎকে গুলি করায় যে যুবকের নাম উঠে আসছে, সেই অভিজিৎ পুণ্ডারি আরএসএসের সক্রিয় সদস্য বলে জানতে পেরেছি। রাজনৈতিক ঈর্ষার বলি হয়েছেন সত্যজিৎ। হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত।’ দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি তুলে তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘অভিযুক্তরা কেউ রেহাই পাবে না। অপরাধ করে দিল্লিতে গা ঢাকা দিয়ে শাস্তি এড়ানো যাবে না।’ নদিয়ার সীমান্ত এলাকা হাঁসখালি এবং সংলগ্ন জায়গায বিজেপি সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করে সরাসরি দিলীপ ঘোষকে দায়ী করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সত্যজিৎ বিশ্বাস নদিয়া জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি এবং অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সংগঠক ছিলেন। তাঁর হত্যাকাণ্ড জেলা যুব সংগঠনের পক্ষে বড়সড় ধাক্কার। তাই দলের যুব সংগঠনের মূল কাণ্ডারি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে কিছুটা হলেও নদিয়ার যুব তৃণমূল শিবির উজ্জীবিত হবে বলে মনে করছে স্থানীয় রাজনৈতিক মহলের একাংশ।এর আগে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রবিবারই কৃষ্ণগঞ্জে গিয়ে নিহতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, নদিয়ায় দলের পর্যবেক্ষক অনুব্রত মণ্ডল।
ফিল্মি কায়দায় জনবহুল রাস্তায় চলল গুলি, আতঙ্ক মেদিনীপুর শহরে
গত শনিবার, সরস্বতী পুজোর উদ্বোধন করতে গিয়ে মঞ্চে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসের। ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করে জেরাপর্ব চলছে হাঁসখালি থানায়। সামগ্রিক তদন্তভার নিয়েছে সিআইডি। তদন্তে উঠে আসছে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। অকুস্থল থেকে কিছুটা দূরেই উদ্ধার হয়েছে একটি আগ্নেয়াস্ত্র। সেই আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ধন্দে তদন্তকারীরা। খুনের পর কি অস্ত্র ফেলেই পালিয়েছে দুষ্কৃতীরা? নাকি তদন্তকে ভুল পথে চালিত করতে ওই অস্ত্র ওখানে ফেলে রাখা হয়েছিল? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে পুলিশে প্রাথমিক অনুমান, দুষ্কৃতী পাকাপোক্ত নয়, অপরাধ জগতে সবে হাতেখড়ি হয়েছে তার। তাই হয়ত অসাবধানতাবশত এমন একটা ভুল করেছে। তবে ঘটনা যাইই হোক, লোকসভা নির্বাচনের আগে বিধায়ক খুনের মতো একটা গুরুতর ঘটনা নদিয়ার রাজনৈতিক এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে, তা বলাই বাহুল্য।
ছবি: সুজিত মণ্ডল
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.