Advertisement
Advertisement
Howrah Station RPF

চলন্ত ট্রেন থেকে পড়লেন বাবা-ছেলে, রেলরক্ষীর ক্ষিপ্রতায় রক্ষা দু’জনের

তিন বছরের সন্তানকে কোলে নিয়ে ট্রেন থেকে পড়ে যান এক ব্যক্তি।

RPF rescued man with child at Howrah Station | Sangbad Pratidin

ছবি:প্রতীকী

Published by: Anwesha Adhikary
  • Posted:July 27, 2022 11:41 am
  • Updated:July 27, 2022 11:41 am  

সুব্রত বিশ্বাস: রাখে হরি, মারে কে? প্রবাদবাক্যটি একটু বদলে দিয়ে বলা যায়, রাখে রেলরক্ষী, মারে কে? আরপিএফ কর্মীরা (RPF) নিজের জীবন বিপন্ন করে রেলযাত্রীদের নিশ্চিত মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে আনছেন, এমন দৃশ্য দেশের বিভিন্ন জায়গায় দেখা গিয়েছে। সোমবার সকালে তেমনই এক লোম খাড়া করা কাণ্ডের সাক্ষী রইল খাস হাওড়া স্টেশন (Howrah Station)। নিজের প্রাণ বাজি রেখে এক যুবক ও তাঁর শিশুপুত্রকে বাঁচালেন এক রেলরক্ষী। কুর্নিশ ও অভিনন্দনে ভেসে গিয়েও ঘটনার নায়ক সেই আরপিএফ কনস্টেবল অমিতকুমার বারি অবশ্য নির্লিপ্ত। “এ আর বেশি কী করলাম! অন্যের জীবন বাঁচানোটাই তো আমাদের ডিউটি”-সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া তাঁর। 

 

এদিন সকাল দশটা কুড়ির আপ পাঁশকুড়া লোকাল হাওড়া স্টেশনের ১৩ নম্বর প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে যেতেই প্ল্যাটফর্মের লোকজন আঁতকে ওঠেন। দেখা যায়, বাচ্চা কোলে নিয়ে এক দম্পতি চলন্ত ট্রেনে চড়ার চেষ্টা করছেন। স্ত্রী উঠে পড়তে পারলেও স্বামী পারেননি, বাচ্চাকে কোলে নিয়ে তিনি কামরার হ্যান্ডেল ধরে ঝুলতে থাকেন। শেষমেশ ভার সামলাতে না পেরে তিন বছরের সন্তানকে আঁকড়ে চলন্ত ট্রেন থেকে প্ল্যাটফর্মে আছড়ে পড়ে যান, এবং গড়িয়ে চলে যেতে থাকেন ট্রেন ও প্ল্যাটফর্মের কালান্তক মরণ-ফাঁকের দিকে।

Advertisement

[আরও পড়ুন:‘সিপিএম-বিজেপি চক্রান্ত করে স্বামীর নাম জড়াচ্ছে’, অভিযোগ পার্থর প্রাক্তন দেহরক্ষীর স্ত্রীর]

অমিতকুমার বারি

সম্ভাব্য মর্মান্তিক পরিণতির কথা ভেবে সমবেত জনতা যখন শিউরে উঠে চোখ বুজছে, তখনই পরিত্রাতা হয়ে দেবদূতের মতো অনিলকুমারের আগমন। স্টেশনে কর্তব্যরত ওই আরপিএফ কনস্টেবল অসামান্য ক্ষিপ্রতায় দৌড়ে এসে দু’টি শরীরকে হ্যাঁচকা টান মেরে সরিয়ে আনেন প্ল্যাটফর্মের ধার থেকে, বলা যায় মৃত্যুর কিনার থেকে। নিরাপদ দূরত্বে টেনে এনে তুলে ধরে বসান। হইচই শুনে গার্ড ট্রেন থামিয়ে দেন। 

বাবা-ছেলেকে ধাতস্থ করে মায়ের সঙ্গে ওই ট্রেনেই তাঁদের রওনা করিয়ে দিয়ে দায়িত্ব শেষ করেছেন অমিতকুমার। হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন অন্য যাত্রীরা, দু’টি প্রাণের রক্ষাকর্তাকে অকুণ্ঠ প্রশংসায় ভরিয়ে দিতেও কসুর করছেন না। খুশি কর্তারাও। পূর্ব রেলের আরপিএফের আইজি পরম শিবের বক্তব্য, কর্মীরা তৎপর থাকায় হামেশা এই ধরনের বিপদ থেকে যাত্রীরা রক্ষা পেয়ে যান। হাওড়া-সহ বহু স্টেশনে তেমন নজির রয়েছে। দক্ষতা ও দায়িত্ববোধের স্বীকৃতিস্বরূপ অমিতকুমারকে দু’হাজার টাকা ইনাম দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আইজি। রেল এদিন ঘটনাটির ভিডিও টুইট করেছে।

আট বছরের কর্মজীবনে যাত্রীর প্রাণ বাঁচানোর অভিজ্ঞতা অমিতের এই প্রথম। তিনিও খুশি। তাঁর কথায়, “আমারও দুটো বাচ্চা আছে, ওদের বয়সি একটা বাচ্চাকে এতবড় বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারলাম, ভাল তো লাগবেই।” কর্মজীবনের গোড়ায় বেশ কয়েক বছর কমান্ডো ছিলেন, কঠোর শারীরিক অনুশীলন করতে হয়েছে। “তারই ফসল আজ উঠল। ট্রেনিং তো এ ভাবেই কাজে লাগে”-মন্তব্য অমিতের। যদিও বিরাট কোনও কাজ করেছেন বলে তিনি মনে করছেন না। শুধু বলছেন, “এগুলো আমাদের ডিউটির মধ্যেই পড়ে।”

[আরও পড়ুন: দলের মধ্যেই বিরোধিতা! উলুবেড়িয়ায় ফের কর্মসূচি বাতিল করলেন শুভেন্দু]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement