সুব্রত বিশ্বাস: আট লক্ষ টাকা দিলেই রেলে চাকরি। এই ‘টোপে’ সুদূর রাজস্থান থেকে হাওড়ায় ছয় চাকরি প্রার্থী যুবক। বুধবারই সকলে ছ’জনকে হাওড়া ডিআরএম বিল্ডিংয়ে হাজির করা হয় নিয়োগপত্র দেওয়ার অছিলায়।
রেলে নিয়োগে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে ডিভিশনের সদরে। তাদের মধ্যে হাজির করা হয় রাজস্থানী ছ’জনকে। তবে তারা নিয়োগের কোনও পরীক্ষা দেয়নি। হাজির অন্য সকলের কাছে তারা জানতে পারে পরীক্ষায় সফলতার পর তাদের নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। আসল নিয়োগ প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলে তারা অনুমান করে ভুয়ো নিয়োগের ‘ফাঁদে’ পা দিয়ে ফেলেছেন। হাওড়া ডিআরএম বিল্ডিংয়ে হাজির থাকা আরপিএফ ও সিআইবির দল সেখানে পৌঁছে যায়। হাতেনাতে ধরা পড়ে যায় দু’ই প্রতারক। বেলুড় বাজারের বাসিন্দা রনজিৎ প্রসাদ ও লিলুয়া রেল আবাসন জেনিন্স রোডের গৌতম সিংকে ডিআরএম বিল্ডিং এলাকার থেকে গ্রেপ্তার করে আরপিএফ। ধৃতদের কাছ থেকে ভুয়ো নিয়োগের একাধিক সরঞ্জাম আটক করেছে আরপিএফ।
নিয়োগের ফাঁদে পড়া লক্ষ্মী নারায়ণ, আনন্দ সিং, দলীপ সিং রাথোড়, কৃষাণ সিং রাথোড়, দীলিপ সি গৌর, বান্টিং সিং ছ’জনই রাজাস্থানের বাসিন্দা। তারা আরপিএফকে জানিয়েছে, গৌরব সিং ও রাকেশ নামের দু’জন তাদের সঙ্গে নিয়োগের সব ব্যবস্থা নিয়ে কথা বলে, মাথা পিছু আট লক্ষ টাকায় রাজি হয়ে তারা রাজস্থান থেকে হাওড়া আসে। ধৃতরা তাদের হোটেলে রাখে। হাতে ভুয়ো নিয়োগপত্র দিয়ে হাওড়া ডিআরএম বিল্ডিংয়ে নিয়ে আসে। এরপরেই প্রকৃত নিয়োগ হওয়াদের মাঝে তাদের ছেড়ে দিলেই ঘটে যায় বিপত্তি।
সেখান থেকে তারা জানতে পারে, প্রতারণার শিকার হয়েছেন। বিষয়টি আরপিএফকে জানাতেই গ্রেপ্তার হয় দু’জন। পূর্ব রেলের আরপিএফের আইজি পরম শিব বলেন, “টাকা লেনদেনের আগেই ধরা পড়ে যায় প্রতারকরা। ভুয়ো নিয়োগের কাগজ ধরিয়ে দু’একদিন এদিক ওদিক রেল চত্বরে ঘুরিয়ে টাকা নিয়ে চম্পট দেয় এই ধরণের প্রতারকরা। আগেও বিআর সিং হাসপাতাল থেকে ধরা পড়ে এমন চক্রীরা।” পূর্ব রেলের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, নিয়োগের এমন অসংখ্য চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে নিয়োগ সব সময় আরআরবি ও আরআরসির মাধ্যমে হয়। প্রতারণা নিয়ে সতর্ক করলেও ফাঁদে পা দিচ্ছেন অনেকেই। রেল ফের এ নিয়ে সতর্ক করা শুরু করেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.