দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: পশ্চিম মেদিনীপুরের লালগড়ের পর এবার সুন্দরবন৷ রাজ্যে ফের উদ্ধার রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের দেহ৷ তবে কীভাবে মারা গেল বাঘটি, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা৷
মঙ্গলবার সকালে মৎস্যজীবীরা মাছ ধরতে যাচ্ছিলেন৷ সেই সময় সুন্দরবনের আজমলমাড়ির জঙ্গলে একটি বাঘের দেহ দেখতে পান তাঁরা৷ খবর দেওয়া হয় বনকর্মীদের৷ তড়িঘড়ি তাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়৷ বাঘটির দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়৷ প্রাথমিক তদন্তে বনকর্মীদের দাবি, বাঘটি অন্তত পনেরো দিন আগে মারা গিয়েছে৷ তবে কীভাবে বাঘটি মারা গেল, তা নিয়েই তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা৷
বাঘের মৃত্যুর কারণ নিয়ে মাথাচাড়া নিয়ে নানা সম্ভাবনা৷ বনকর্মীদের দাবি, আজমলমাড়ির জঙ্গলে ক্রমশই হরিণের আনাগোনা বাড়ছে৷ তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে চোরাশিকারীর সংখ্যাও৷ অনেকেই মনে করছেন, হরিণ ধরার জন্য চোরাশিকারীদের পাতা ফাঁদেই মারা গিয়েছে ওই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারটি৷ আবার বাঘটির মৃত্যুর কারণ নিয়ে দ্বিতীয় সম্ভাবনাকেও এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়৷ অনেকেই বলছেন, যে রাস্তায় বাঘের দেহটির দেখা মিলেছে, ওই রাস্তা দিয়েই মৎস্যজীবীরা মাছ ধরতে যান৷ সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র ভয় পেয়ে আত্মরক্ষার স্বার্থেও মৎস্যজীবীরা বাঘটিকে মেরে ফেলতেও পারে৷ এই বিষয়টিও ভেবে দেখছেন বনকর্মীরা৷ যদিও বনদপ্তরের তরফে বাঘের মৃত্যুর কারণ নিয়ে এখনও স্পষ্টভাবে কিছুই বলা হয়নি৷ সুন্দরবনের জঙ্গলে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় বনদপ্তর এবং উপকূলরক্ষী বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে৷ কীভাবে চোরাশিকারীদের দাপট ক্রমশই বাড়ছে, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন৷ নিরাপত্তার বড়সড় গলদ না থাকলে কীভাবে আজমলমাড়ির জঙ্গলে চোরাশিকারীদের বাড়বাড়ন্ত হল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে৷
বছরখানেক আগে লালগড়ে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার আনাগোনার আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল৷ বাঘটিকে পাকড়াও করতে বনদপ্তরের তরফে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়৷ তবে তাতেও জালে ধরা পড়েনি বাঘটি৷ পরিবর্তে স্থানীয় বাসিন্দারাই পিটিয়ে খুন করে ওই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারটিকে৷ ক্রমশই বাঘের সংখ্যা কমছে অথচ তার মাঝেই একের পর এক রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বিগ্ন পশুপ্রেমীরা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.