সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: তার প্রত্যাবর্তনের আভাস মিলেছিল আগেই। দিন দুই আগে ঝাড়খণ্ডের রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের পায়ের ছাপ দেখা গিয়েছিল বান্দোয়ানের জঙ্গলে। সেই রাস্তা দিয়ে হেঁটে হেঁটে এবার মানবাজার ব্লকে ঢুকে পড়ল জিনাতসঙ্গী ওই বাঘ। এবার গ্রামীণ কালো পিচ রাস্তা দিয়ে ওই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের হেঁটে যাওয়ার দৃশ্য দেখলেন বান্দোয়ান ছুঁয়ে থাকা মানবাজার ২ ব্লকের
নেকড়ে গ্রামের এক যুবক। যেন মনে হচ্ছে সুন্দরবনের গ্রাম! বারবার দেখা দিচ্ছে দক্ষিণরায়।
শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা দৃশ্যটা চোখে পড়ে মানবাজারের বছর পঁয়ত্রিশের যুবক দিলীপ কুম্ভকারের। নেকড়ে মোড় থেকে ওই গ্রামেই বাড়ি যাওয়ার সময় মোটরবাইকের আলোয় প্রায় ১৫ ফুট দূরে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারকে হেঁটে যেতে দেখেন তিনি। চোখের সামনে বাঘ দেখে রীতিমত চমকে ওঠেন। তারপর অবশ্য স্নায়ুর উপর যথাযথ নিয়ন্ত্রণ রেখে মোটর বাইকের ব্রেক কষেন তিনি। ওই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার পার হয়ে যাওয়ার পর বিষয়টি এলাকার মানুষকে জানালে ওই রাতেই ভিড় জমে যায় নেকড়ের গ্রামীণ রাস্তায়। দেখা যায় জিনাতসঙ্গীর অসংখ্য পদচিহ্ন।
নেকড়ে গ্রামের যুবক, পেশায় গাড়ির চালক দিলীপ কুম্ভকার বলেন, “শনিবার তখন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা হবে। আমি নেকড়ে মোড় থেকে বাড়ি যাচ্ছিলাম। মোটরবাইকের হেডলাইটের আলোয় গ্রামীণ রাস্তায় দেখি, বাঘ পার হচ্ছে। প্রথমে খানিকটা থমকে যাই। গাড়ির ব্রেক কষে দাঁড়িয়ে পড়ি। বাঘটি গ্রামের ওই পিচ রাস্তা দিয়ে চলে যাওয়ার পর এলাকার মানুষজনকে খবর দিই।” তৎক্ষণাৎ বনদপ্তরকেও বিষয়টি জানানো হয়। তবে জিনাতসঙ্গীকে নিয়ে এখনও বনদপ্তর কিছু বলতে চাইছে না। ওই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত কংসাবতী দক্ষিণ বনবিভাগের। তাই বাঘের অবস্থান নিয়েও তাদের মুখে কুলুপ।
গত শুক্রবার ঝাড়খণ্ডের দলমা থেকে ওই জিনাত সঙ্গী আবার বান্দোয়ানের জঙ্গলে প্রবেশ করে। আবাসস্থল সেই রাইকা পাহাড়ের ভাঁড়ারি এলাকায় যায় ওই বাঘ। শনিবার ওই ভাঁড়ারি থেকে মানবাজার ২ ব্লক এলাকায় চলে আসে সে। রবিবার সাতসকালে নেকড়া ছাড়াও বড়কদম, লালডুংরি, কিস্টপুর, কুমিরাডি, হাতিরামগোড়া এলাকায় দক্ষিণ রায়ের পদচিহ্ন পাওয়া যায়। এলাকার মানুষজন সহ বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকা থেকে বান্দোয়ানের উদলবনি রাহামদা হয়ে ওই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার আবার ভাঁড়ারি জঙ্গলে গিয়েছে। যাওয়ার পথে অসংখ্য পায়ের ছাপ দেখে শোরগোল বেঁধে যায় মানবাজার ২ ব্লক এলাকায়। ওই এলাকার বাসিন্দা বিপ্লব মান্ডি বলেন, “নেকড়া এলাকার সরিষাবাড়ি জঙ্গলে বাঘের পায়ের ছাপ আমরা সকালবেলায় দেখতে পাই। এই বাঘটি মাঝেমধ্যে ঝাড়খণ্ড গেলেও বান্দোয়ান, মানবাজার ২ ব্লক এলাকায় বারবার ফিরে আসছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.