দেবব্রত মণ্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: সুন্দরবনে ফের রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের হামলায় মৃত্যু মৎস্যজীবীর। চলতি মাসে দ্বিতীয়বার। ডিসেম্বরের শুরুতেই কুলতলির ম্যানগ্রোভ জঙ্গলে দক্ষিণ রায়ের হানায় প্রাণহানি হয় এক মৎস্যজীবীর। এবার ঘটনাস্থল সুন্দরবনের পীরখালি জঙ্গল। বৃহ্স্পতিবার ভোরে জঙ্গল সংলগ্ন নদীতে কাঁকড়া ধরার সময় বাঘের আক্রমণের জেরে এক মৎস্যজীবীর মৃত্যু হয়েছে। মৃতের নাম বিষ্ণুপদ মণ্ডল (৩০)।
জানা গিয়েছে, ওই যুবকের বাড়ি লাহিড়ীপুরের দত্তপাড়ায়। দু’দিন আগে সুজিত ও বাবু মণ্ডল নামে দুই সঙ্গীর সঙ্গে তিনি জঙ্গলে গিয়েছিলেন। এদিন ভোরে যখন জাল টেনে কাঁকড়া ধরার জন্য ব্যস্ত ছিলেন, সেই সময় পিছন থেকে হামলা করে বাঘ। টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও করে। সঙ্গীরা লাঠি নিয়ে ধাওয়া করায় বাঘ পালায়। কিন্তু বাঘের হামলায় প্রাণ যায় ওই মৎস্যজীবীর। প্রসঙ্গত, মাছ ধরার নামে মৎস্যজীবীদের একাংশ জঙ্গল থেকে মধু কিংবা কাঁকড়া ধরার চেষ্টা করেন৷ মোটা টাকা পাওয়ার আশায় কাঁকড়া ধরতে জঙ্গলে ঢুকে যান মৎস্যজীবীরা৷ জঙ্গলে শিক গুঁজে মাটি খুঁড়লেই মেলে ভালমানের কাঁকড়া৷ আর সেখানেই ওত পেতে থাকে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার৷ সুযোগ বুঝে শিকারের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঘ৷ ঘটে দুর্ঘটনা৷ এই রেওয়াজ চলছে গত কয়েক দশক ধরেই৷ পেটের টানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জঙ্গলে নামতে একপ্রকার বাধ্য হন সুন্দরবনের গোসাবা, কুলতলি, হিঙ্গলগঞ্জ, মথুরাপুর, নামখানা ব্লকের প্রায় দেড় লক্ষ মৎস্যজীবী৷ ফলে, বাড়ছে দুর্ঘটনা৷
[ডুয়ার্সে ফের হাতির তাণ্ডব, ৭টি বাড়ি ভাঙল বুনো দাঁতাল]
চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত বাঘের আক্রমণে মৃত্যু হয়েছে ১২ জন মৎস্যজীবীর৷ হামলায় জখম হয়েছেন ১০ জনেরও বেশি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির দিন কাটে আর্থিক দুর্দশায়৷ বন্যপ্রাণীর আক্রমণে মৃত্যু হলে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক সাহায্যের ব্যবস্থাও রয়েছে৷ অভিযোগ, সরকারি প্রচারের অভাবে সেই তথ্য জানেন না মৎস্যজীবীদের পরিবারের একাংশ৷ আর জানলেও ক্ষতিপূরণের সেই টাকা পেতে বছর কেটে যায়৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.