সালানপুরে কল্ল্যা গ্রামে রায়পরিবারের বিপজ্জনক বাড়ি।
স্টাফ রিপোর্টার, আসানসোল: এক সময় সালানপুরের রায় পরিবার ছিল জমিদার। এখন জমিদার নেই, নেই জমিদারিও। এখন ভগ্ন-হানা বাড়িতে দিন কাটে রায়দের। বিপজ্জনক বাড়িতে ত্রিপল খাটিয়ে দিন যাপন মনোরঞ্জন রায়ের। আবাস যোজনায় বার বার আবেদন করেও মেলেনি বাড়ি।
সালানপুর ব্লকের কল্ল্যা গ্রামে রায় পরিবার ছিল এলাকার জমিদার। ছিল পূর্বপুরুষদের কয়লা খনির ব্যবসা। এখন সেই পরিবার আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল। এখন তাঁদের আভিজাত্যের চিহ্ন হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে শুধু ওই বিশাল বাড়িটি। কিন্তু জমিদার পরিবারের বর্তমান প্রজন্মের আর্থিক অবস্থা এখন তলানিতে। তাদের কিছু সদস্য দিনমজুরের কাজ করছেন। তাই কুঁড়ে ঘর বানিয়ে ত্রিপল টাঙিয়ে দিন গুজরান করতে হচ্ছে তাঁদের।
পরিবারের সদস্য মনোরঞ্জন রায় বলেন, “এই জমিদার বাড়িটি এখন আমাদের কাছে আর ঐতিহ্য নয়, এখন অভিশাপ। ওই বাড়িতে থাকা যায় না। যখন তখন ছাদ ভেঙে পড়ছে। হানাবাড়ির রূপ নেওয়ায় সাপের আঁতুড়ঘর তৈরি হয়েছে। এতটাই বিপজ্জনক।” পরিবারের সদস্যা ভাগ্যবতী রায় বলেন, “পঞ্চায়েত থেকে আমাদের জানিয়েছে ওই অট্টালিকার জন্যই বাড়ি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে ছেলে-মেয়ে নিয়ে ভাঙা বাড়ির একটি অংশে ত্রিপল খাটিয়ে থাকতে হচ্ছে।” তাঁদের আক্ষেপ, এতো কষ্টে আছি তাও আবাস প্রকল্পে নাম উঠছে না।
কল্যা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শ্রীকান্ত পাত্র জানান, একদা সম্ভ্রান্ত পরিবারের এই দশা নজরে আছে প্রশাসনেরও। কিন্তু পাকা বাড়ি থাকায় কোনওভাবেই সরকারি প্রকল্প দেওয়ার ক্ষমতা নেই জনপ্রতিনিধি থেকে আধিকারিকদের।
তবে বারাবনির বিধায়ক বিধান উপাধ্যায় বলেন, “পুরানো হোক বা নতুন। বাপ ঠাকুরদার বাড়ি থাকলে আবাস যোজনায় মিলবে না ঘর। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় এমনটাই নিয়ম। এই নিয়মের গেরোয় বিপাকে পড়েছে রায় পরিবার।” তৃণমূল বিধায়ক জানান, আবাস নিয়ে এই জটিলতা তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। আইনি জটিলতায় সরকারিভাবে ঘর না মিললে ব্যক্তিগত ও দলগত উদ্যোগ নিয়ে নতুন ঘর তৈরি করে দেওয়া হবে। দুঃস্থ রায় পরিবারের পাশে দাঁড়াবার প্রতিশ্রুতি দেন বারাবনির তৃণমূল বিধায়ক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.