টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: ফের রাতের অন্ধকারে মৃতদেহ সৎকার করতে গিয়ে প্রবল ক্ষোভের মুখে বাঁকুড়া জেলা পুলিশ ও প্রশাসনিক আধিকারিকরা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার রাতে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা এলাকা। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে নামানো হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। লাগাতার গোপনে দেহ দাহের প্রতিবাদে বুধবার পথে নামে জেলা সিপিএম নেতৃত্ব। তাঁদের কথায়, পুলিশের আচরণে আতঙ্ক বাড়ছে স্থানীয়দের মধ্যে। স্বাস্থ্য দপ্তরের ভূমিকা বাঁকুড়াবাসীকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে বলেই অভিযোগ সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর।
প্রশাসন সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতে যে বৃদ্ধকে দাহ করা নিয়ে অশান্তির শুরু, তিনি সোমবার থেকে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতি ছিলেন। বিষ্ণুপুরের বাঁকাদহ গ্রামের বাসিন্দা তিনি। জানা গিয়েছে, সোমবার রাত একটা নাগাদ প্রথমে তাঁকে বিষ্ণুপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু সেখানে বৃদ্ধকে ভরতি নেওয়া হয়নি। এরপর রাত ২টো নাগাদ তাঁকে ভরতি করা হয় বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে ঘণ্টাখানেক চিকিৎসা চলার পরই তাঁর মৃত্যু হয়। এরপর মঙ্গলবার গভীর রাতে পুলিশ দেহ সৎকারের জন্য নিয়ে যেতেই শুরু অশান্তি।
বিশাল পুলিশ বাহিনীর উপস্থিতিতে দীর্ঘক্ষণ পর স্থানীয়রা শান্ত হলে বুধবার ভোররাতে দাহ করা হয় দেহ। মৃতের ছেলে জানিয়েছেন, দেহ দাহের সময় তাঁদের শ্মশানে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এখনও হাতে আসেনি মৃতের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট। এখানেই উঠছে প্রশ্ন, রিপোর্ট না পেয়ে কেন ওই শ্মশানে দাহ করা হল দেহ।
এই ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার সকালে পথে নামে বাঁকুড়া জেলা সিপিএম। ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন সুজন চক্রবর্তী। এদিন বড়জোড়া শিল্পাঞ্চল এলাকায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন সিপিএমের বড়জোড়া এরিয়া কমিটির সদস্যরা।
মঙ্গলবার রাতের ঘটনায় সংক্রমণের আশঙ্কা করছেন সব দলের নেতা-কর্মীরাই। বিজেপি সাংসদ তথা চিকিৎসক সুভাষ সরকার প্রশ্ন তোলেন, “মৃতদের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে আসার আগে কেন দাহ কাজ করছে জেলা প্রশাসন?” পাশাপাশি, আরও বেশি করে রোগীর পরীক্ষার দাবি জানান তিনি। প্রসঙ্গত, শনিবার গভীর রাতে দেহ করা নিয়ে স্থানীয়দের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল পুলিশকে। কয়েকদিনের ব্যবধানে ফের কার্যত লোক চক্ষুর আড়ালে দেহ দাহের চেষ্টা ভয় ধরিয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.