সৌরভ মাজি, বর্ধমান: “জেলায় জেলায় যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের অনেকেই মানুষের সঙ্গে সম্পর্কহীন। নানা ধরনের অসামাজিক ও অসৎ কাজে লিপ্ত। এসব কী রাজ্য নেতৃত্ব জানেন না, না কি তাঁরা নিরুপায়। তাঁদের উদ্দেশ্যে আমার অনুরোধ দেওয়াল লিখন পড়ুন, না হলে দেরি হয়ে যাবে। স্বপ্ন আমাদের পূরণ হবে না আগামী বছর। নন্দলাল হয়ে লাভ কী?” বুধবার দুপুরে সোশ্যাল মিডিয়ায় এমনই বিস্ফোরক পোস্ট করেছেন গত লোকসভা নির্বাচনে বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী পরেশচন্দ্র দাস (Paresh Chandra Das)।
আর এই নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বিজেপির অন্দরেও। শুধুমাত্র উপরের বক্তব্যেই সীমাবদ্ধ থাকেননি বিজেপির (BJP) কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের স্নেহভাজন পরেশবাবু। তিনি রাজ্য নেতৃত্ব সম্পর্কে লিখেছেন, “গত এক মাসে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য কমিটির মাইক্রোস্কোপিক এবং গুরুত্বহীন পরিবর্তন লক্ষ্য করেছি। কিন্তু তা যে নিতান্তই অপ্রতুল সে কথা সকলেই জানেন কেবল রাজ্য নেতৃত্বের কয়েকজন ছাড়া।”
দলের সর্বোচ্চ ওবিসি, তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের দায়িত্ব না দেওয়া নিয়েো ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পরেশবাবু। পোস্টে লিখেছেন, “সর্বোচ্চ স্তরে ওবিসি, এসসি, এসটিদের দায়িত্ব দিয়ে জনসংযোগ ঘটাতে না পারলে বিজেপি সম্ভবত শক্তিশালী হবে না। আজকের ভারতের ছবি এটাই।” একইসঙ্গে মুসলিমদের নিয়ে রাজ্যে কী পরিকল্পনা রয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় পদস্থ অফিসার পরেশবাবু। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের পেজে লিখেছেন, “মুসলমানদের নিয়ে রাজ্যের স্ট্রাটেজি কি? তারা কী অচ্ছুৎ নাকি? মুসলমানরা কী সরকার গঠনে অংশগ্রহণ করবেন না? আমাদের উচিত পার্টিসিপেশন ফর এভরিওয়ান, ডেভলপমেন্ট ফর অল নীতি গ্রহণ করা এবং অবিলম্বে অযোগ্যদের সরিয়ে জেলায় জেলায় সংগঠনকে শক্তিশালী করা।”
এরপরই সোশ্যাল মিডিয়ায় শোরগোল পড়ে যায়। পক্ষে-বিপক্ষে অনেকেই মতামত প্রকাশ করেছেন। বেশিরভাগই দলীয় নেতৃত্বের প্রতি ক্ষোভ উগড়ে গিয়েছেন। উজ্জ্বল পোদ্দার নামে একজন পরেশবাবুর পোস্টে কমেন্ট করেন, “২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের পর আপনি কোথায় আছেন, আপনাকে তো খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। শুধু মুখে বললে হবে না। ফিল্ডে নেমে কাজ করুন।” মিঠুন বিশ্বাস নামে একজন কমেন্ট করেছেন, “একদম মনের কথা বললেন। সত্যিই চারিদিকে যা কাদা ছোড়াছুড়ি আর নেতাদের ইগো তাতে স্বপ্ন সফল হওয়া মুশকিল।” পরেশবাবু যে কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন সেই এলাকার বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষের সঙ্গে এদিন সন্ধেয় মোবাইলে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, “উনি ব্যক্তিগতভাবে কী পোস্ট করেছেন আমি দেখিনি। উনি লোকসভায় আমাদের প্রার্থী ছিলেন। ওই বিষয়ে যা বলার রাজ্য নেতৃত্ব বলতে পারবেন। আমার বলার এক্তিয়ারে নেই।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.