সৌরভ মাজি, বর্ধমান: রসগোল্লার আগেই জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন বা জিআই পেয়েছে বর্ধমানের সীতাভোগ-মিহিদানা৷ বাংলার রসগোল্লার বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ঢাকঢোল পিটিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলেও নীরবেই বর্ষবরণ করলেন বর্ধমানের সীতাভোগ-মিহিদানা প্রস্তুতকারী শিল্পীরা৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প বর্ধমানের মিষ্টি হাবেও ছিল না কোনও কর্মসূচি৷ প্রচারের অভাবে সরকারি প্রকল্পে থাকা মিষ্টি হাবও ধুঁকছে৷ বর্ধমানের প্রসিদ্ধ সীতাভোগ-মিহিদানা আন্তর্জাতিক ফুড ফেস্টিভ্যালে প্রশংসিত হলেও সংরক্ষণ ও প্যাকেজিংয়ের অভাবে বাজার না পাওয়ায় চিন্তায় ঘুম উড়েছে ব্যবসায়ীদের৷
রাজ্য সরকারের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উন্নয়ন দপ্তরের তরফে বর্ধমানের মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সংগঠনকে সীতাভোগ ও মিহিদানার সংরক্ষণ ও বিজ্ঞানসম্মত ভাবে প্যাকেটে মুড়ে ভিন রাজ্যে সরবরাহ করার বিষয়ে একাধিক প্রস্তাবও দিয়েছে৷ অভিযোগ, উপযুক্ত পরিকাঠামো না থাকায় ক্ষতির বহর বাড়ছে ব্যবসায়ীদের৷ পরিকাঠামো সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে শিল্প দপ্তরের প্রধান সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করেছেন সংগঠনের কর্তারা৷ আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন এই সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক প্রমোদ সিংহ। তাঁর কথায়, “রসগোল্লার অনেক আগেই আমাদের বর্ধমানের সীতাভোগ-মিহিদানা জিআই তকমা পেয়েছে। কিন্তু আমরা মার খেয়েছি সংরক্ষণ ও প্যাকেজিংয়ের ব্যবস্থা করতে না পারায়। বিদেশে সরবরাহের প্রস্তাব এলেও আমরা তা করতে পারছি না। আলাপনবাবুকে সব জানিয়েছি। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। দেখা যাক কী করতে পারি।”
[রহিম ভাইয়ের হাতে তৈরি প্রতিমার কাঠামো, সম্প্রীতির মেলবন্ধন জগদ্ধাত্রী পুজোয়]
প্রমোদবাবু জানান, কিছুদিন আগে তাঁরা মুম্বইয়ে আন্তর্জাতিক ফুড ফেস্টিভ্যালে সীতাভোগ-মিহিদানা নিয়ে গিয়েছিলেন। প্রশংসাও করেছেন সকলে। বিদেশে কীভাবে সরবরাহ করা যায় তা নিয়ে অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন৷ অনলাইনে অর্ডার দেওয়া যায় কি না তাও জানতে চেয়েছেন বিদেশের অনেক সংস্থা ও কর্তারা। কিন্তু সংরক্ষণ ও প্যাকেজিংয়ের প্রতিবন্ধকতা বিশ্বের দরজা বন্ধ করে রেখেছে৷ রসগোল্লার ক্ষেত্রে সেই সমস্যা থাকে না৷ দিব্যি টিনের বাক্সে প্যাকেজিং করে বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে রসগোল্লা।
[রায়গঞ্জে গুলিবিদ্ধ তৃণমূল ছাত্রনেতা, গ্রেপ্তার ৫]
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে বর্ধমানে মিষ্টি হাব গড়া হয়েছে। লক্ষ্য, বর্ধমানের সীতাভোগ ও মিহিদানা থেকে শুরু করে শক্তিগড়ের ল্যাংচা ও জেলার অন্যান্য বিখ্যাত মিষ্টান্নর গুণগত মান বাড়ানো ও বিপণনে সহায়তা দেওয়া৷ প্রথম পর্যায়ে সেই মিষ্টি হাবে অনেক দোকানও চালু হয়৷ কিন্তু বছর ঘুরতেই অনেকগুলি দোকানে ঝাঁপ বন্ধ হয়ে যায় সেখানে৷ ইতিমধ্যে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু করতে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদ টেন্ডারও ডেকেছে। জেলা প্রশাসনের কর্তাদের আশা, দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শেষ হলে ঘুরে দাঁড়াবে মিষ্টি হাব। জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি দেবু টুডু জানান, মিষ্টি হাব থেকেই বর্ধমানের প্রসিদ্ধ মিষ্টান্নর বিপণনে নতুন দরজা খুলে যাবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.