ছবি: প্রতীকী
বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: ছয়-সাত মাস আগেও বেঁচেছিলেন। মেয়ের সঙ্গেই বাড়িতে থাকতেন। তারপর কী হয়েছে কেউ জানে না। কোনও আত্মীয় খোঁজ নিলে মেয়ে দোলা কখনও বলতেন, মা বাড়িতে নেই, কলকাতায় গিয়েছেন। কাউকে কাউকে বলতেন, মা অসুস্থ। তবে আসলে যে ঠিক কী ঘটেছে, তা জানতেন না কেউই। শনিবার রাতে সামনে এল আসল ঘটনা। এক আত্মীয়া দোলার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে তাঁর মা মন্দিরার খোঁজ করতেই ঘরে দেখতে পেলেন পড়ে রয়েছে কঙ্কাল! ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে নদিয়ার (Nadia) ধুবুলিয়ায়।
এদিন ওই আত্মীয়াকে প্রথমে দোলা জানায়, তাঁর মা ঘরে নেই। দিনের পর দিন বৃদ্ধা বাড়িতে নেই, এ কথা শুনে সন্দেহ হয় ওই আত্মীয়ার। তিনি জোর করে অন্য ঘরে প্রবেশ করেন। তখনই দেখেন পড়ে রয়েছে কঙ্কাল। এরপরই গোটা বিষয়টি তাঁর কাছে স্পষ্ট হয়। বুঝতে পারেন, মন্দিরাদেবীর মৃত্যু হয়েছে অনেকদিন আগেই। ঠিক কতদিন আগে মৃত্যু হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। কঙ্কালটি উদ্ধার করে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। পুলিশের অনুমান, প্রায় ছ’মাস ধরে মায়ের মৃতদেহ আগলে রাখেছিলেন মেয়ে।
এলাকায় একটি বেসরকারি ব্যাংকের শাখা অফিসে পরিচারিকার কাজ করতেন দোলা। মায়ের দেহ বাড়িতে ফেলে কাজেও যেতেন তিনি। এ ছাড়া আর অন্য কোথাও বেরতেন না। নিজে রান্না করে খেতেন, সবসময় বন্ধ রাখতেন দরজা-জানালা। ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর দোলা জানান, মাকে দুধ গরম করে খেতে দিতেন তিনি। কবে মায়ের মৃত্যু হয়েছে তা নাকি তিনি জানতেন না! দোলা বলেন, “মা ওই ঘরে শুয়ে বলেছিল, আমি সুস্থ হয়ে উঠে আসব ঠিক।”
মৃত্যু হলেও তা যাতে কাউকে না জানান, সেই পরামর্শই নাকি দোলাকে দিয়েছিলেন তাঁর মা। মেয়ের দাবি, মা তাঁকে সাবধান করে বলেছিলেন, মৃত্যুর খবর পেলে সবাই লুটেপুটে খাবে, তাই কাউকে জানানোর প্রয়োজন নেই। তবে কী কারণে মায়ের দেহ এ ভাবে বাড়িতে ফেলে রাখলেন তিনি, তা স্পষ্ট নয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.