দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: সিলিকোসিসে আক্রান্ত ও মৃতের পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফোটাতে এগিয়ে এলেন রবিন হুড আর্মির সদস্যরা। রবিবার সকালে খাবার ও উপহার সামগ্রী নিয়ে রবিন হুড আর্মির সদস্যরা পৌঁছে যান দক্ষিণ ২৪ পরগনার মিনাখাঁর গোয়ালদহ গ্রামে। বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটান গ্রামবাসীদের সঙ্গে। তাঁদের পাশে পেয়ে হাসি ফোটে মিনাখাঁর বাসিন্দাদের মুখেও।
[আরও পড়ুন:নাম নেই অসমের এনআরসিতে, স্বামী-সংসার ছেড়ে ঘরে ফিরতে চায় এরাজ্যের মেয়েরা]
রবিবার হঠাৎই রবিনহুড আর্মির প্রায় ৪৫ জন সদস্য হাজির হন মিনাখাঁর গোয়ালদহ গ্রামে। সেখানে সিলিকোসিসে আক্রান্ত ও মৃতদের পরিবারের হাতে চাল, কেক, বিস্কুট, চকোলেট, ব্রাশ, টুথপেস্ট ও খেলনা তুলে দেয় তাঁরা। বেশ কিছুক্ষণ সময়ও কাটান। এ প্রসঙ্গে গ্রামের বাসিন্দা সইদুল বলেন, “গ্রামের অধিকাংশই সিলিকোসিসে আক্রান্ত। ক্রমশ বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। মৃত্যুর মিছিলে গ্রামের অনাথ বাচ্চারা আনন্দ করতেই ভুলে গিয়েছে। আজ যেভাবে ওই সংস্থা উপহারের ডালি নিয়ে সবার মাঝে হাজির হয়েছে তার জন্য সকলকে ধন্যবাদ।”
রবিনহুড আর্মির সদস্য সৈয়দ মঞ্জুর রহমান ও মাসুম আলম বলেন, এতদিন আমরা খাবার সংগ্রহ করে ক্ষুধার্ত মানুষদের হাতে তুলে দিতাম। কিছুদিন আগেই আমরা মিনাখাঁর এই গ্রামে সিলিকোসিসে আক্রান্ত হয়ে বহু মানুষের মৃত্যুর বিষয়টি জানতে পারি। তারপরই এই গ্রামে আসার সিদ্ধান্ত নিই।
২০১৪ সালের ২৬ আগস্ট দিল্লিতে কয়েকজন যুবক-যুবতীকে সঙ্গে নিয়ে পথ চলা শুরু সংস্থার। আর সংস্থার পাঁচ বছরের জন্মদিনে তাঁরা হাজির হল গোয়ালদহে। গ্রামের শিশুদের সঙ্গে জন্মদিন পালন করে তাঁরা। সংস্থার সদস্যরা জানান, প্রথম থেকে এতটা সহজ ছিল না খাবার সংগ্রহ। বরং রীতিমতো হিমশিম খেতে হত তাঁদের। পরবর্তীকালে ছবিটা বদলেছে, অনেকেই তাঁদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন।
জানা গিয়েছে, শুধুমাত্র শহর ও শহরতলী নয়। ইতিমধ্যে রবিনহুড আর্মি দেশের ৩০ টি শহর এবং বিশ্বের ১৬ টি দেশে তাদের সংগঠন গড়ে তুলেছে। ইতিমধ্যে পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, ইজিপ্ট, মালয়েশিয়া-সহ বিভিন্ন দেশের অসহায় মানুষদের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে তাঁরা। ওই সংস্থার হিসাব অনুযায়ী ভারতবর্ষে প্রতি বছর উৎপাদিত খাবারের প্রায় ৪০ শতাংশ নষ্ট হয়। যার মূল্য প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। বিভিন্ন হোটেল, রেস্তরাঁ-সহ অনুষ্ঠান বাড়িতে কুড়ি শতাংশের বেশি খাবার ফেলে দেওয়া হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.