সুব্রত জশ, আরামবাগ: দোকানের পাশে ধান রাখাকে কেন্দ্র করে তুমুল মারপিট। ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূলের কাউন্সিলর এবং তাঁর দাদা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় মানুষ রাস্তা অবরোধ করল আরামবাগে। ঘটনাস্থলে পুলিশ এবং পুরসভার চেয়ারম্যান পৌঁছালে আরও উত্তপ্ত হয় পরিস্থিতি। বুধবার আরামবাগ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নওপাড়া এলাকায় এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আরামবাগ আরামবাগ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আরামবাগ তিরোল রাস্তার ধারে পূর্ত দপ্তরের জায়গায় দোকান রয়েছে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিমাংশু মালিকের ভাইপোর। সেই দোকানের পিছনে রয়েছে স্থানীয় বাসিন্দা দুলাল সরকারের বাড়ি। তিনি তাঁর বাড়ির সামনে মাঠ থেকে ট্রাক্টরে করে ধানগাছ নিয়ে এসে নামিয়ে ছিলেন। তাঁর অপরাধ ওই দোকানের দেওয়ালেতে ধান গাছ ঠেকে ছিল। দেওয়ালের উপর ধান গাছ কেন থাকবে এই নিয়ে শুরু বিবাদ। তারপরেই শুরু হয় মারপিট। ঘটনায় অভিযুক্ত কাউন্সিলর ও তার দাদা। এই ঘটনা জানাজানি হতেই স্থানীয় প্রতিবেশী থেকে এলাকার মানুষ আরামবাগ তিরোল রাস্তা অবরোধ করেন। প্রায় এক ঘন্টা চলে অবরোধ। তারপর আরামবাগ থানার পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে জনতার রোষের মুখে পড়ে।
[ছত্তিশগড়ে আইইডি বিস্ফোরণে শহিদ জওয়ান, আসানসোলে শোকের ছায়া]
এই ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আসেন আরামবাগ পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন নন্দী। অবরোধকারীরা জানান, অবিলম্বে কাউন্সিলরকে পদত্যাগ করতে হবে এবং তাকে গ্রেপ্তার করতে হবে। অবশেষে আরামবাগ পুরসভার চেয়ারম্যান ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে প্রায় এক ঘন্টা বাদে অবরোধ উঠে। সকালে অবরোধ হওয়ার কারণে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। আটকে পড়ে স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরা এবং অফিস যাত্রীরা। এই মারপিটের ঘটনায় আহত হয় প্রতিবেশী দুলাল সরকার, তাঁর স্ত্রী ছবি সরকার এবং তাঁর ছেলে কল্যাণ সরকার। দুলাল সরকারকে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। বাকিদের বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসা করানো হয়।
আক্রান্ত দুলাল সরকার জানান, তিনি ওই এলাকার দীর্ঘদিনের বাসিন্দা। সামনে পূর্ত দপ্তরের জায়গাতেই চাষবাসের ধান ঝাড়ার কাজ করা হয়। কিন্তু কিছুদিন আগে কাউন্সিলরের ভাইপো ওই এলাকায় একটি দোকান তৈরি করেন। তাঁর দেওয়ালে ট্রাক্টরের মজুররা ধান ফেলে দেয়। সেই বিষয় নিয়ে তাঁদের বলতে এলে, তাঁরা বলেন কদিন বাদেই তো ধান ঝাড়া হয়ে যাবে। জায়গাও পরিষ্কার হয়ে যাবে। এই কথা বলার পরই তাঁর ছেলে কল্যাণ সরকারকে বেধড়ক মারধর করতে থাকেন কাউন্সিলর হিমাংশু মালিক এবং তাঁর দাদা। তিনি তখন ছাড়াতে গেলে তাঁকে ও তাঁর স্ত্রীকে মারধর করা হয়। কাউন্সিলরের দাদা শুভ্রাংশু মালিক পেশায় স্কুল শিক্ষক। সেই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা বিক্ষোভ শুরু করে রাস্তা অবরোধ করেন। যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই কাউন্সিলর হিমাংশু মালিক জানান, মারধরের ঘটনার সঠিক নয়। তাঁর ভাইপো বেকার, তাই রাস্তার ধারে একটি দোকান করেছেন। দোকানের পাশ থেকে ধান সরাতে বলায় তাঁদের দিকেই নাকি তেড়ে আসেন দুলাল সরকার। তখন একটু ধাক্কাধাক্কি হয়। পা পিছলে পড়ে যে কোনও ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তাঁদের নামে বদনাম রটানোর চেষ্টা হচ্ছে। আরামবাগ পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন নন্দী ঘটনাস্থলে জানান, কী ঘটনা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
[রেলগেট খোলা অবস্থায় ঢুকে পড়ল ট্রেন, যাত্রী বিক্ষোভ শ্যামনগরে]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.