সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: রবিবার সকালে ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী নীলাঞ্জন রায়ের বজবজ থেকে একটি রোড-শো করার কথা ছিল। সেজন্য আগাম অনুমতিও নেওয়া হয়েছিল বলে দাবি বিজেপির। কিন্তু বজবজ থানার শ্যামপুরের নারকেলডাঙায় এই প্রচার মিছিল শুরু হওয়ার সময়েই কয়েকশো মহিলা মিছিলটির পথ আটকায়।
তাঁদের হাতে না ছিল কোনও রাজনৈতিক দলের ঝান্ডা, মুখে না ছিল কোনও দলের পক্ষে স্লোগান। রাস্তায় বসে পড়ে মহিলারা বিজেপির মিছিলটির গতিরোধ করেন। তাঁদের দাবি, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ঘোষণা করেছিল কালো টাকা দেশে ফেরত এনে তার থেকে প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ করে টাকা দেওয়া হবে। ঘোষণা মতো ১৫ লক্ষ টাকা করে অ্যাকাউন্টে দেওয়া হলে তাঁরাও এবার থেকে বিজেপির প্রচার মিছিলে হাঁটবেন, আর সেই প্রতিশ্রুতি এখনই প্রার্থীকে দিতে হবে। প্রতিশ্রুতি না দিলে কোনওভাবেই এদিন বিজেপির প্রচার মিছিলকে তাঁরা আর এগোতে দেবেন না।
বজবজ থানার পুলিশ ওই মহিলাদের অনেকরকমভাবে বুঝিয়েও অবরোধ মুক্ত করতে পারেনি। মহিলারা দফায় দফায় কখনও বিজেপি প্রার্থীর গাড়ির সামনে এসে, কখনও রাস্তায় বসে পড়ে অবরোধ চালিয়ে যেতে থাকেন। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে এই অবরোধ চলার পর অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
[ আরও পড়ুন: পণের দাবিতে বধূকে পুড়িয়ে খুনের অভিযোগ, কাঠগড়ায় স্বামী ]
বিজেপি প্রার্থী নীলাঞ্জন রায় জানিয়েছেন, অবরোধকারী মহিলারা কেউই অরাজনৈতিক সাধারণ মানুষ নন, তাঁরা প্রত্যেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী ও সমর্থক। তৃণমূলের প্ররোচনাতেই এই বিক্ষোভ করা হচ্ছে। পুলিশ প্রশাসনের কঠোর সমালোচনা করে বিজেপি প্রার্থীর অভিযোগ, তাঁর এদিনের অনুমতি নেওয়া রোড শো তৃণমূল আটকে দিলেও পুলিশ প্রশাসন ছিল সম্পূর্ণ নির্বিকার। পরে এই রোড শো শুরু হলেও দফায় দফায় সেই মিছিলকে আটকানো হয় এবং দাবি করা হয় ১৫ লক্ষ টাকার পরিবর্তে অন্তত এক লক্ষ টাকা করে তাঁদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ঢুকিয়ে দেওয়া হোক। আর তা যদি তাঁরা না পারেন তাহলে এভাবে হাতজোড় করে এলাকায় ভোটভিক্ষা করা যাবে না। বাধ্য হয়ে প্রচারমিছিল বজবজ হয়ে চলে আসে মহেশতলার চাকাতলা মোড়ের কাছে। সেখানেও সাধারণ মানুষ সেই মিছিল ঘিরে ধরে স্লোগান দিতে থাকেন। বিজেপি প্রার্থী নীলাঞ্জন রায় তাঁর গাড়ি ঘুরিয়ে ফের বজবজ এলাকায় প্রচারে বেরিয়ে যান।
এদিকে তৃণমূল নেতা ও জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শ্রীমন্ত বৈদ্য জানান, বিজেপির বিরুদ্ধে যে সাধারণ মানুষ ক্রমেই গর্জে উঠছেন এদিনের ঘটনা তারই ইঙ্গিত। বিজেপি মানুষকে মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এখন ভোটের মুখে মানুষ তার জবাব চাইছেন। এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কেউ জড়িত নয় বলে তাঁর দাবি।
[ আরও পড়ুন: কেশপুরে তিরবিদ্ধ দুই তৃণমূল কর্মী, কাঠগড়ায় বিজেপি ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.