সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফণীর ঝাপটায় এক লহমায় এলোমেলো হয়ে গিয়েছে ওড়িশার বিস্তীর্ণ অংশ৷ তছনছ হয়ে গিয়েছে পুরী৷ মন্দিরের কোনও ক্ষতি হয়নি বলে পুরোহিতরা দাবি করেছেন৷ তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, ভিতরের কিছু অংশের দেওয়াল, মূর্তিতে ফাটল ধরেছে৷ ফণী পরবর্তী পরিস্থিতিতে এখন পুনর্নির্মাণের সময়৷ আর মঙ্গলবার, অক্ষয় তৃতীয়ার দিন থেকেই জগন্নাথদেবের জন্য প্রার্থনায় শহরে শুরু হল চন্দনযাত্রা৷
ধ্বংসের মধ্যে থেকেই শুরু হোক নির্মাণের যাত্রা৷ এই মন্ত্র নিয়েই মঙ্গলবার সকাল থেকে অবিকল পুরীর মন্দিরের মতোই নিয়ম মেনে শুরু হয়েছে চন্দনযাত্রা৷ অক্ষয় তৃতীয়ার দিন রীতি মেনে ৪২ দিনের উৎসবের সূচনা হয়৷ পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রীতি অনুযায়ী, এদিন থেকেই শুরু হয় রথ নির্মাণের কাজ৷ প্রথম ২১ দিন প্রধান দেবতাদের মূর্তি-সহ পঞ্চপাণ্ডব নামে শিবলিঙ্গ সুসজ্জিত করে শোভাযাত্রা বেরোয়৷ শেষ ২১ দিনের উৎসব যাপন অবশ্য হয় মন্দিরের ভিতরে৷ নবদ্বীপেও এই রীতি পালিত হয়৷ তবে তা অনেক ছোট আকারে৷ বৈশাখি পূর্ণিমায় হয় চন্দনযাত্রা৷ বিগ্রহকে চন্দন মাখিয়ে ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়৷ বিভিন্ন জায়গা পরিক্রমা করে স্নানযাত্রার মধ্যে দিয়ে তা সমাপ্ত হয়৷ উৎসব চলে ৩দিন ধরে৷তবে এবারের বিষয়টা আলাদা৷ এবছরের পরিস্থিতিতে শহর এবং রাজ্যের জগন্নাথ মন্দিরগুলিতে প্রার্থনা শুরু হয়েছে৷ ফণী পরবর্তী অবস্থায় পুরীর মন্দিরের দেবতার হয়তো যত্নআত্তির ত্রুটি হতে পারে, কিন্তু অন্যত্র ভক্তি ভরে, নিয়ম মেনে দেবতার পুজোর মধ্যে দিয়েই প্রার্থনার কোনও ত্রুটি রাখতে চান না পুরোহিতরা৷
এসবের মধ্যে অবশ্য আরেক ছবি ধরা পড়ল নিউ বারাকপুরের বিশ্বমাতা মন্দিরে৷ এই এলাকা দমদম লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত৷দু’বারের সাংসদ সৌগত রায়ের সঙ্গে এবার লড়াই হতে চলেছে বিজেপির শমীক ভট্টাচার্য, সিপিএমের নেপালদেব ভট্টাচার্য এবং কংগ্রেসের সৌরভ সাহার৷ তাই ভোটের প্রচারে বেরিয়ে নিজেদের কেন্দ্রের উল্লেখযোগ্য আশ্রম ও মন্দিরে গিয়ে পুজো দিলেন তিন প্রার্থী৷ সৌগত রায়, শমীক ভট্টাচার্য, সৌরভ সাহা৷ দলের আদর্শ মেনে অবশ্য এসব থেকে দূরেই রইলেন বাম প্রার্থী নেপালদেব৷ এই মন্দিরে পুজো দিয়ে দেবদেবীর আশীর্বাদের সঙ্গে সঙ্গে জনসংযোগের কাজও সেরে নেন তাঁরা৷ নিউ বারাকপুর বিশ্ব সেবাশ্রম সংঘের বিশ্বমাতার মন্দির এমনই এক উল্লেখযোগ্য পীঠস্থান।
এদিন বিশ্বমাতা দক্ষিণা কালীর আশীর্বাদ নেওয়ার জন্য মন্দিরে প্রথমে যান বিজেপি প্রার্থী শমীক ভট্টাচার্য। তিনি প্রথমবার বিশ্ব সেবাশ্রম সংঘে আসেন ও ঠাকুর শ্রী শ্রী সমীর ব্রহ্মচারীকে প্রণাম করে আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন। শুধু তাই নয়, বিশ্বমাতার মন্দিরে কালীমূর্তির সামনে আরতিও করেন শমীক ভট্টাচার্য৷ লড়াইয়ে কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও আশীর্বাদ নিতে এতটুকুও পিছপা হননি কংগ্রেসের তরুণ প্রার্থী সৌরভ সাহা। তিনিও ঢাকঢোল পিটিয়ে সমর্থক-সহ মিছিল করে মন্দিরে গিয়ে পুজো করেন৷ আর তৃণমূল প্রার্থী সৌগত রায় বিশ্ব সেবাশ্রম সংঘের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রায়ই আসেন। ব্যক্তিগতভাবেও তিনি শ্রী শ্রী সমীর ব্রহ্মচারীর গুণমুগ্ধ। তাই ভোটের প্রচারে সৌগত বাবুর আসাটা অপ্রত্যাশিত নয়। তিনিও মন্দিরে এসে সমীরেশ্বরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং বিশ্বমাতাকে আরতি করে প্রণাম জানিয়ে আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.