Advertisement
Advertisement
আত্মহত্যা

‘বাবা ৬০ হাজার টাকা দিয়ে ভরতি করেছে, আর ফেরার উপায় নেই’ সুইসাইড নোটে লিখেছেন ঋষিক

স্রেফ মানসিক চাপেই কি আত্মহত্যা? প্রশ্ন প্রতিবেশী ও স্কুলের শিক্ষকের।

Rishik Kholey suffers from mental pressure in St. Xavier's College
Published by: Tanumoy Ghosal
  • Posted:August 4, 2019 9:23 am
  • Updated:August 4, 2019 9:47 am  

নব্যেন্দু হাজরা, সিঙ্গুর:  স্বপ্ন ছিল সেন্ট জেভিয়ার্সে পড়ার। উচ্চমাধ্যমিকে দারুণ কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করে সেই স্বপ্ন সফলও হয়েছিল।  কিন্তু সেখানে এসে স্বপ্নভঙ্গ। বাংলা মিডিয়ামে পড়া, আবাল্য গ্রামের পরিবেশে বেড়ে ওঠা সদ্য তরুণ মানিয়ে নিতে পারেননি কলকাতার কেতাদুরস্ত সাহেবি কলেজের আদব-কায়দার সঙ্গে। অথচ ছেড়ে যাওয়ারও পথ খুঁজে পায়নি। এই মানসিক টানাপোড়েনের চাপ সহ্য করতে না পেরেই সিঙ্গুরের মেধাবী ছাত্র ঋষিক কোলে নিজের জীবনে দাঁড়ি টেনে দিয়েছে বলে তদন্তকারীদের অভিমত।

[আরও পড়ুন: প্রেমিকাকে পুড়িয়ে খুনের অভিযোগ, কৃষ্ণনগরের ঘটনায় দগ্ধ প্রেমিকও]

বস্তুত,  ঋষিকের লিখে যাওয়া সুইসাইড নোটের ছত্রে ছত্রে এই দ্বন্দ্বেরই ইঙ্গিত। নোটে তিনি লিখেছেন, ‘সমস্ত ক্লাস ইংরেজিতে পড়ানো হয়। শিক্ষকদের ইংরেজিতে পড়ানোটা মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। কম্পিউটার ক্লাসও একদম বুঝতে পারছি না। কলেজে পড়াশোনার লেভেল খুব হাই।’ বাংলা মাধ্যমে পড়ে ইংরেজি মিডিয়ামের সহপাঠীদের সঙ্গে মানিয়ে নিতে তাঁর বিস্তর অসুবিধা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন ঋষিক। সুইসাইড নোটে তাঁর আক্ষেপ, ‘বাবা এত টাকা খরচ করে ভরতি করাল। কিন্তু আমি তো চাপ নিতে পারছি না! বাবা বকবে। আমার এখানে ভরতি হওয়াটাই ভুল হয়েছে। ফেরারও পথ নেই। তাই আমি আত্মহত্যা করছি।’

Advertisement

বৃহস্পতিবার সকালে এজেসি বোস রোডের কলেজ হস্টেল থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন ঋষিক। সেদিনই দুপুরে উত্তরপাড়া-হিন্দমোটর স্টেশনের মাঝে রেললাইনে এক তরুণের দেহ উদ্ধার হয়। শুক্রবার রাতে জানা যায়, সেটি ঋষিকের। ঘটনাস্থলে সুইসাইড নোটটি পাওয়া গিয়েছে।  জানা গিয়েছে, কলেজে ভরতি জন্য ৬০ হাজার টাকা খরচ করে ফেলেছিলেন ঋষিকের বাবা। আর সে কারণেই তাঁর মনে হয়েছিল, ফিরে আসার পথ নেই। ছেলের এমনটা কেন মনে হল, ঋষিকের বাবা-মা কিন্তু ভেবে পাচ্ছেন না। শনিবার সকালেই তাঁর বাবা রতিকান্ত কোলে ছেলের দেহ আনতে যান বেলুড় জিআরপিতে। ময়নাতদন্তের পর দেহ বিকেলে নিয়ে আসা হয় সিঙ্গুরের বেলতলা লেনের বাড়িতে। সেখানে কিছুক্ষণ রাখার পর শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।

 হুগলির সিঙ্গুরে অপূর্বপুরের বেলতলা লেনে বাড়ি ঋষিকের। বাবা  অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী আর মা স্কুলে পড়ান। দিদি ধানবাদে আইআইটিতে গবেষণা করেন। বাড়িতে আগাগোড়াই পড়াশোনার পরিবেশ। তাঁর মধ্যেই সেন্ট জেভিয়ার্সে পড়তে চেয়েছিলেন ঋষিক। লক্ষ্য ছিল অধ্যাপক হওয়ার। উচ্চমাধ্যমিকে ৫০০-র মধ্যে ৪৭০ নম্বর পেয়েছিলেন তিনি। ইংরেজিতে ৮৩। প্রথমে শ্রীরামপুর কলেজে ভরতি হয়েও পরে সেন্ট জেভিয়ার্সে চলে যান তিনি। কিন্তু কলেজে ভরতির লক্ষ্য পূরণ হলেও অধ্যাপক হওয়ার আর হল না ঋষিকের। স্কুলের শিক্ষক থেকে প্রতিবেশী প্রত্যেকের মুখেই একই প্রশ্ন, শুধু মানসিক চাপেই কি এভাবে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন ঋষিক?

[আরও পড়ুন: রূপশ্রী প্রকল্পের টাকা পেতে স্বামীকেই ফের বিয়ের ছক, ফাঁস বিজেপি নেতার স্ত্রীর কীর্তি ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement