সুমন করাতি, হুগলি: ‘বিচার চাই’ দাবিতে এখন সরব গোটা রাজ্য। আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের মামলায় দ্রুত বিচার ও দোষীর কঠোরতম সাজার দাবিতে মুখর সকলে। জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন সেলিব্রিটি থেকে আমজনতা। একেকজনের প্রতিবাদের ধরন একেকরকম। তারই মধ্যে অভিনবত্বের ছাপ রাখলেন হুগলির এক চা দোকানি। তাঁর দোকানে রাখা পোস্টার যেন ক্যালেন্ডার। কতদিন বিচার পায়নি ‘তিলোত্তমা’? তার হিসেব রাখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ক্রেতাদের তিনি মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ”চা খেতে খেতে ভুলে যাবেন না তিলোত্তমা বিচার পায়নি।” আর এভাবেই প্রতিবাদের তুফান উঠছে চায়ের কাপেও।
হুগলির জিরাটের বাসিন্দা জয় ধর, বয়স ৩৬ বছর। অসম লিঙ্ক রোডের পাশে বারুইপাড়ায় রয়েছে তাঁর চায়ের দোকান। স্নাতক স্তরে ফাইনাল ইয়ারের সময়ে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছিলেন জয়। কয়েকদিন ঠিকাদারি, সেলসম্যানের কাজ করেন। নিজে স্বাধীনমতো কিছু করতে চান বলে চায়ের দোকান খুলে বসেন। দোকানের নাম দেন জয়দা’র চায়ের দোকান। প্রতিদিন বিকেল হলেই চায়ের টানে সেই দোকানে ভিড় জমান অনেকে। তাছাড়া অসম লিঙ্ক রোড ধরে যাওয়া অনেক গাড়ির যাত্রীরা দাঁড়িয়ে চা খান। এখন তাঁদের সবাইকে জয় মনে করিয়ে দিচ্ছেন, এখনও বিচার হয়নি আর জি করে তরুণী চিকিৎসকের নৃশংস ঘটনার। চায়ের কাপে আরামের চুমুক দিয়ে তা যেন কেউ ভুলে না যান।
জয়ের দোকানের ঠিক ডান দিকের দেওয়ালে একটি বোর্ড ঝোলানো রয়েছে। তাতে নীল কালিতে লেখা, ”চা খেতে খেতে ভুলে যাবেন না তিলোত্তমার বিচার পায়নি।” আর সেই ছবি এখন ভাইরাল। দোকানের এক ক্রেতা জিৎ ঘোষ বলেন, ”তিলোত্তমা বিচার পাইনি বেশ কয়েকদিন হয়ে গিয়েছে। আমরা সবাই রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করছি। তবে তার মধ্যে এটা দেখে ভাল লাগছে যে চায়ের ব্যবসা চালিয়েও প্রতিবাদের আওয়াজ তুলেছেন। বিচার আমাদের পেতেই হবে।”
তাঁর কথায়, ”এখনও আর জি করে ধর্ষণ ও খুনের বিচার হয়নি। চায়ের দোকান সামলে সেভাবে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করতে পারছি না। তাই এভাবেই প্রতিবাদ করছি। যাঁরা প্রতিবাদ করছেন, তাঁদের পাশে আছি। তাঁদের সাহস জোগাচ্ছি। চলার পথে মানুষ যাতে ভুলতে না যায়। ধর্ষণের বিরুদ্ধে যেন এক কঠোর আইন তৈরি হয়। প্রতিটা বাড়ির মহিলারা যেন সুরক্ষিতভাবে রাস্তায় বেরতে পারেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.