অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: আর জি কর কাণ্ডে হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতিতে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের সঙ্গে নাম জড়িয়েছে হাওড়ার সাঁকরাইলের বাসিন্দা বিপ্লব সিংয়ের। তাঁর সংস্থা মা তারা ট্রেডার্স হাসপাতালে চিকিৎসার সরঞ্জাম সরবরাহ করতেন। সেজন্য রবিবার সকালে সাঁকরাইলে বিপ্লবের বাড়ি ও সংস্থার অফিসে হানা দেন সিবিআই আধিকারিকরা। সিবিআই হানার পর থেকেই প্রশ্ন উঠেছে–কে এই বিপ্লব সিং?
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কয়েকবছর আগে এলাকায় বিপ্লবের একটি আঁকার স্কুল ছিল। ভালো শিল্পী বিপ্লব আঁকা শেখাতেন। এমনকী তিনি ব্যানার, পোস্টারও লিখতেন। ব্যানার পোস্টার লেখার জন্যও তাঁর একটি দোকান ছিল। বিভিন্ন সভা সমিতি, ছোট অফিসের জন্য ব্যানার পোস্টার, ফ্লেক্স লিখে দিতেন বিপ্লব। বিপ্লবের বাবা কলকাতার একটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ছিলেন। যেহেতু ছেলে ব্যানার, পোস্টার লিখতেন, তাই তাঁর বাবাই বিপ্লবকে হাসপাতালে টিনের প্লেটে নম্বর লেখা কিংবা বেড নম্বর লেখার বরাত পাইয়ে দেন। এই ধরনের কাজ করতে করতেই হাসপাতালে প্রবেশ করে বিপ্লব। তার পর ধীরে ধীরে আর জি কর হাসপাতালে চিকিৎসার সরঞ্জাম সরবরাহের ব্যবসা ফেঁদে বসে।
স্থানীয়রা আরও জানিয়েছেন, হাসপাতালে ব্যবসা শুরুর পর থেকেই বিপুল টাকা ও সম্পত্তির মালিক হয়ে ওঠে বিপ্লব। আগে সাইকেলে চেপে ঘোরা বিপ্লব রাতারাতি দামি গাড়ি কিনে ফেলেন। হাটগাছায় নিজেদের দোতলা বাড়ির একটি অংশকে সংস্কার করার পাশাপাশি সাঁকরাইলেই ৩৮ লক্ষ টাকা দিয়ে আরও একটি বাড়ি কেনেন তিনি। গত কয়েকবছর ধরে বাড়িতে জাঁকজমকপূর্ণভাবে কালীপুজো করে বিপ্লব দেদার পয়সা ওড়ান বলেও দাবি করেন বিপ্লবের প্রতিবেশীরা।
বিপ্লবের এই বিপুল পরিমাণ টাকার উৎস কী আর জি কর হাসপাতালে বেআইনিভাবে আর্থিক লেনদেন করা? সেই প্রশ্নই এখন তুলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সামান্য ফ্লেক্স, পোস্টার লিখে দিনাতিপাত করা বিপ্লবের রাতারাতি এহেন উত্থান দেখে বিস্মিত পাড়া-প্রতিবেশীরাও। প্রসঙ্গত, রবিবার রাত পর্যন্ত বিপ্লবের বাড়িতে থেকে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিবিআই আধিকারিকরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.