অর্ণব দাস, বারাকপুর: নিয়মিত ডায়েরি লিখতেন মেয়ে। একথা আগেই জানিয়েছিলেন আর জি করে নিহত চিকিৎসকের মা। এমনকী, ওই ডায়েরি থেকেই মেয়ের রহস্যমৃত্যুর তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ কোনও সূত্র মিলতে পারে বলেও আভাস দিয়েছিলেন তিনি। সেই ডায়েরি পুলিশ সিজ করেছিল বলে জানান তাঁরা। তার পরদিনই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন নির্যাতিতার মা। সরাসরি প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ এনে জানালেন, মেয়ের লেখা ডায়েরির কয়েকটি পাতা ছেঁড়া হয়েছে। তার প্রমাণ তাঁদের কাছে রয়েছে। মৃতার বাবা-মায়ের এমন অভিযোগে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। তবে কি ডায়েরিতে এমন কিছু লেখা ছিল যা তদন্তের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে, আর তা না হলেও কেন ছেঁড়া হল পাতা–উঠছে প্রশ্ন। সেইসঙ্গে তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন, নির্যাতিতার মৃত্যুর ঘটনাস্থল নিয়েও।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, নবম শ্রেণি থেকেই ডায়েরি লেখার অভ্যাস ছিল তরুণীর। প্রতিদিনের রুটিন, দৈনন্দিন কার্যকলাপ, মনের কথা, ভালোমন্দ সবটাই লিখতেন ডায়েরিতে। অভিশপ্ত রাতেও তিনি ডায়েরি লিখেছিলেন বলে শনিবার জানান তাঁর মা। রবিবার ফের সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ডায়েরি প্রসঙ্গে তাঁরা বলেন, ‘‘ডায়েরির কয়েকটি পাতা ছেঁড়া ছিল, এর প্রমাণ আমাদের কাছে আছে। একটি ছেঁড়া পাতার ছবি আমাদের কাছে রয়েছে। মৃত্যুর রাতে মেয়ে সেটা লিখেছিল। এর বেশি কিছু বলব না।’’ তবে, সেই ছেঁড়া পাতার ফোটো সিবিআইকে দেওয়া হয়নি বলেও এদিন জানান তাঁরা। বলেন, ‘‘সিবিআই নিশ্চয়ই এনিয়ে আমাদের বললে, দেব।’’ তদন্তের স্বার্থে এনিয়ে তাঁরা কিছু বলতে না চাইলেও পরিবার সূত্রে খবর, ‘সুখে থাকতে চাই’ এই সংক্রান্তই কিছু মৃত্যুর আগে রাতে লিখেছিলেন তরুণী চিকিৎসক।
অন্যদিকে, কান্নাভেজা গলায় দ্রুত ন্যায়বিচার চেয়ে মৃতার মা মেয়ের মৃত্যুর ঘটনাস্থল নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন। তিনি জানান, ‘‘অন্যত্র খুন হওয়ার সন্দেহ এখনও আমাদের আছে। আমরা একটা কথা জানতে পেরেছি, যেভাবে মেয়ের মৃতদেহ দেখানো হয়েছে, সেভাবে দেহ ছিল না। মেয়ের শরীরে জামাকাপড় কিছুই ছিল না।’’ তাঁদের অভিযোগ, ‘‘মেয়েকে দেখতে দিতে যে কয়েক ঘণ্টা আমাদের অপেক্ষা করানো হয়েছিল, সেইসময় আমাদের আড়াল করে প্রমাণ লোপাট করা হয়েছিল।’’ সপক্ষে যুক্তি দিয়ে তাঁদের দাবি, “ক্ষতবিক্ষত দেহ দেখার পরও ফোন করে আমাদের বলা হয়েছে, মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। কিছু আড়াল করার চেষ্টা না হলে এটা কেউ বলতে পারে? এত বড় হত্যাকাণ্ডকে আত্মহত্যা বলাই তো অপরাধ।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.