Advertisement
Advertisement

Breaking News

বঞ্চনা থেকে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন

৭ বছরেও মেলেনি প্রাপ্য, জীবন যন্ত্রণায় ইতি টানতে স্বেচ্ছামৃত্যু চান অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক

তাঁর প্রাপ্য দ্রুত মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাস জেলা প্রাইমারি স্কুল কাউন্সিলের চেয়ারম্যানের।

Retired school teacher wants euthanasia as he didn't get his dues
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:August 18, 2020 12:01 pm
  • Updated:August 18, 2020 12:16 pm  

বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: বেঁচে থাকার ইচ্ছা ফুরিয়েছে। বর্তমানে মৃত্যুই শ্রেয়। অন্তত এমনটাই মনে করছেন নবদ্বীপ প্রাথমিক স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। অবসর গ্রহণের পর কেটে গিয়েছে সাতটি বছর। নিজের প্রাপ্য পেনশন, পিএফ (Provident Fund), গ্র্যাচুইটির জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বহুবার আবেদন করেছেন। অথচ মেলেনি কিছুই। চরম আর্থিক কষ্টের মধ্যে তাঁকে কাটাতে হয়েছে বহুদিন। তাঁর এই পরিস্থিতির কথা শুনে দ্রুত সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন নবদ্বীপ আরবানের সাব-ইন্সপেক্টর।

অবসরপ্রাপ্ত ওই শিক্ষকের নাম ঘনশ্যাম সাহারায়। তিনি নবদ্বীপ পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের হরিজনপল্লি উদ্বাস্তু কলোনির জিএসএফ প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। ১৯৯৭ সালে ওই স্কুলে চাকরি থেকে তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়। ওই অবস্থাতেই ২০১৩ সালের মে মাসে অবসর নিতে হয় তাঁকে। নবদ্বীপ পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের পাকাটোল এলাকায় তাঁর নিজের বাড়ি রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর বাড়িতে ঠাঁই হয় না। প্রচণ্ড আর্থিক কষ্টে দীর্ঘদিন ধরেই ভুগতে হচ্ছে। নিজের খাওয়াদাওয়া ও চিকিৎসার খরচ চালানোর সামর্থ্য পর্যন্ত নেই।

Advertisement

[আরও পড়ুন: পরিবেশ রক্ষায় ‘নগরবন’ তৈরিতে আগ্রহী বাবুল সুপ্রিয়, জমি চেয়ে আসানসোলের মেয়রকে টুইট]

গত ৪ মাস ধরে নদিয়ার নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালের এক কোণে ঘনশ্যামবাবুর দিন কাটছিল। অবশেষে তাঁকে ভরতি নিয়ে চিকিৎসা শুরু করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চরম হতাশা আর অবসাদে হারিয়েছেন নিজের বেঁচে থাকার মনের জোর। তাঁর কথায়, ”আমার আর এখন বেঁচে থাকার ইচ্ছা নেই। আমি স্বেচ্ছামৃত্যু চাই।” বর্তমানে তাঁর নিজের দাঁড়ানোর পর্যন্ত ক্ষমতা নেই। অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের জানাচ্ছেন, চার মাস ধরে হাসপাতালে কর্মরত একজন ওয়ার্ড মাস্টার-সহ নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে দু’বেলা খাবার দিয়েছেন। পরিবারের কেউ তাঁর খবর পর্যন্ত নিতে আসেনি এতদিন। যদিও সোমবার খবর পেয়ে দাদাকে দেখতে হাসপাতালে এসেছিলেন ঘনশ্যামবাবুর ছোট বোন অনিতা রায় সাহা। তিনি অসুস্থ দাদাকে চিকিৎসার জন্য ওই হাসপাতালে ভরতি করায় উদ্যোগী হয়েছিলেন।

ঘনশ্যামবাবু জানিয়েছেন, ”আমার প্রাপ্য পেনশন,বকেয়া পিএফ, গ্র্যাচুইটির জন্য নবদ্বীপ আরবান সার্কেলের সাব-ইন্সপেক্টরের কাছে আবেদন করেছিলাম। কিন্তু আজ পর্যন্ত মেলেনি কিছুই। বিষয়টি জানিয়েছি জেলা প্রাইমারি স্কুল কাউন্সিল, নবদ্বীপ আরবান সার্কেলের সাব ইন্সপেক্টর, জেলা স্কুল পরিদর্শক ও অন্যান্য অফিসে। এত কিছু করেও এত বছরে আমার পেনশন ,বকেয়া পিএফ, গ্র্যাচুয়িটি কিছুই মেলেনি। জীবনের প্রতি আমি চরম হতাশ। আর আমার বেঁচে থাকার ইচ্ছা নেই। এইভাবে বেঁচে থাকার থেকে মৃত্যু শ্রেয়। আমি স্বেচ্ছামৃত্যু চাই।”

[আরও পড়ুন: জ্বর-শ্বাসকষ্টে বৃদ্ধের মৃত্যু, করোনা সন্দেহে ফোনেই মুখাগ্নির মন্ত্র পড়লেন পুরোহিত]

যদিও সোমবার ঘটনাটি শোনার সঙ্গে সঙ্গে জেলা প্রাইমারি স্কুল কাউন্সিলের বর্তমান চেয়ারম্যান জ্যোতিপ্রকাশ ঘোষ তৎপর হন। তিনি জানিয়েছেন, ”আমি ওই মাস্টারমশাইকে অনুরোধ করব, তিনি গোটা ঘটনা জানিয়ে নবদ্বীপ আরবান সার্কেলের সাব-ইন্সপেক্টরের কাছে পেনশনের জন্য একটা আবেদনপত্র জমা দিন, উনি যাতে তাড়াতাড়ি পেনশন পেয়ে যান, তার জন্যে আমি যথাসাধ্য উদ্যোগ নিচ্ছি।” সাত সাতটি বছরের অনেক দুঃখ -কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে। এবার হয়তো সুদিন ফিরছে চলেছে অবসরপ্রাপ্ত ওই শিক্ষকের।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement