চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: সোয়াইন ফ্লু-তে আক্রান্ত হয়েছিলেন। রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট যখন হাতে পেলেন পরিবারের লোকেরা, ততদিনে রোগী মারা গিয়েছেন। জেলা হাসপাতালেও সোয়াইন ফ্লু-র পরীক্ষার ব্যবস্থা করার আরজি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখলেন মৃতার স্বামী। তাঁর আক্ষেপ, সময়মতো রোগ ধরা পড়লে বিনা চিকিৎসায় স্ত্রীকে মরতে হত না। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম বর্ধমানের কুলটিতে।
[ জটিল অস্ত্রোপচারে সাফল্য, শ্রমিকের প্রাণ বাঁচালেন সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা]
সপরিবারে কুলটির মিঠানি গ্রামে থাকেন প্রশান্ত পাত্র। চাকরি করেন ইসিএলে। সোয়াইন ফ্লু-তে আক্রান্ত হয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী মৌসুমী। প্রশান্ত পাত্র জানিয়েছেন, গত ২২ জানুয়ারি আচমকাই জ্বর আসে মৌসুমীর। ভেবেছিলেন, ‘ভাইরাল ফিভার’। ওই দম্পতির একমাত্র ছেলে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। তখন তার মক টেস্ট চলছিল, তাই আসানসোলে ননদের বাড়িতে চলে যান মৌসুমী। স্থানীয় চিকিৎসকের ওষুধে জ্বর না কমায় ভরতি হন ইসিএলের কাল্লা সেন্ট্রাল হাসপাতালে। মৃতার স্বামী জানিয়েছেন, হাসপাতালে ভরতি হওয়ার পর থেকে শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয় ওই গৃহবধূর। তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানকার চিকিৎসকরা জানান, অজানা ভাইরাসের আক্রমণে মৌসুমীর কিডনি-সহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ বিকল হয়ে যাচ্ছে। আইসিইউতে রেখে আরও বেশ কয়েক দিন চিকিৎসা চলে। শেষপর্যন্ত চিকিৎসকরা জানান, তাঁরা সন্দেহ করছেন, মৌসুমী পাত্র সোয়াইন ফ্লু-তে আক্রান্ত হয়েছেন। নিয়মমাফিক জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের অনুমতি নিয়ে রক্তের নমুনা পরীক্ষার জন্য কলকাতার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় দুর্গাপুরের ওই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কিট না মেলায় রক্ত পাঠাতে আরও একদিন সময় লেগে যায়।
প্রশান্ত পাত্র জানিয়েছেন, ৩০ তারিখ তাঁর স্ত্রীর রক্তের নমুনা পরীক্ষা জন্য পাঠানো হয় কলকাতায়। কিন্তু, তখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। পরের দিন অর্থাৎ ৩১ জানুয়ারি বিকেলে মারা যান মৌসুমী পাত্র। ২ ফ্রেরুয়ারি রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টে আসে। জানা যায়, সোয়াইন ফ্লু-তে আক্রান্ত হয়েছিলেন ওই গৃহবধূ। জেলা কিংবা মহকুমা হাসপাতালে সোয়াইন ফ্লু পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। একমাত্র কলকাতার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে এই পরীক্ষা হয়।
[‘ছেলেধরা বলে রটিয়ে মেরে ফেলবে’, গণপিটুনির ঘটনায় আতঙ্কে ভিক্ষুকরাও ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.