ছবি: প্রতীকী
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: ৪৮ ঘণ্টা হতে চললেও মেরামতি শুরু হতে পারল না দুর্গাপুর ব্যারেজের (Durgapur Barrage) ভেঙে পড়া ৩১ নং লকগেট। জলশূন্য না হওয়ায় তা পুরোপুরি মেরামত করা যাচ্ছে না। এর জেরে আজ থেকে দুর্গাপুর শিল্পশহর এবং সংলগ্ন বাঁকুড়ার একাংশে জল সংকটের ছবিটা স্পষ্ট হচ্ছে। যদিও দুই জেলা প্রশাসনেরই আশ্বাস, প্রয়োজনে ট্যাঙ্কারে করে জল সরবরাহ করা হবে। তবে লকগেট কবে পুরোপুরি মেরামত হবে, তা নিয়ে চিন্তা থাকছেই।
শনিবার ভোরে দামোদরের জলের তোড়ে দুর্গাপুর ব্যারেজের ৩১ নম্বর লকগেট হঠাৎ বিকট শব্দে ভেঙে যায়। রাজ্যের ব্যর্থতাতেই লকগেট ভেঙে গিয়েছে বলে দাবি করেন বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকার। হু হু করে জল ঢুকতে শুরু করায় সেদিন মেরামতির কাজ শুরু হয়নি। পরবর্তীতে বালির বস্তা ফেলে জলের স্রোত আটকানোর চেষ্টা হলে, তাও বিশেষ কাজ করেনি। রবিবার থেকে ব্যারেজ জলশূন্য করার চেষ্টা শুরু হয়। তবে ৩১ থেকে ৩৪ নং লকগেট এলাকাটি ঢালু হওয়ায় জলের গতিতে বাঁধ দেওয়া যাচ্ছে না।
সেইসঙ্গে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে প্রচুর পাঁক। রবিবার সন্ধের পর থেকে ৩টি জেসিবি মেশিনের সাহায্যে সেই পাঁক পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়েছে। ব্যারেজ পুরোপুরি জলশূন্য না হলে মেরামতির কাজ শুরু করা যাবে না বলে জানাচ্ছেন সেচ দপ্তরের আধিকারিকরা। তাঁদের আশা, সোমবার গোটা দিনের মধ্যে সমস্ত জল বের করে দেওয়া সম্ভব হবে এবং তার পরেই শুরু হতে পারে মেরামতির কাজ। এই কাজে গতি আনতে সোমবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত ব্যারেজের উপর সমস্ত যানচলাচল বন্ধ করা হচ্ছে।
এদিকে, ব্যারেজের লকগেটে বিপত্তির পর জল সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে রবিবার সকালে একবেলা জল সরবরাহ করা হয়েছিল দুর্গাপুরে। কিন্তু বিকেলের পর থেকে আর কোনও জল আসেনি। ফলে সোমবার সকাল থেকেই প্রবল জলসংকট তৈরি হয়েছে গোটা শিল্পশহরে। দুর্গাপুর নগর নিগমের ট্যাঙ্কারে করে বিভিন্ন ওয়ার্ডে জল দেওয়া শুরু হয়েছে। আর তা নিতে দীর্ঘ লাইন চোখে পড়ল সকালেই। এছাড়া পানীয় জলের সমস্যা যাতে না হয়, তার জন্য জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তরের তরফে দেওয়া হচ্ছে জলের পাউচ। উল্লেখ্য, একইভাবে ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে ১ নম্বর লকগেট ভেঙে যাওয়াতে বিপত্তি তৈরি হয়। এবারও কি ততটাই সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে? আশঙ্কায় সময় কাটছে দুর্গাপুরবাসীর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.