শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: মুহূর্তের ঝড়ে যেন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছেন জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকা। বিপর্যয়ে কেউ হারিয়েছেন ভাইকে। কারও স্বামী আর নেই। কেউ বা পরিবারের একমাত্র রোজগেরেকে হারিয়ে কার্যত নিঃস্ব। আবার কারও মাথা গোঁজার আশ্রয়ের পরিস্থিতি সঙ্গীণ। বিপর্যস্তদের কান্নায় ভারী গ্রামের পর গ্রাম। পরিস্থিতি মোকাবিলায় কোমর বেঁধে নেমেছে প্রশাসন।
বিপর্যয়ে প্রাণ গিয়েছে কোচবিহারের চ্যাংড়াবান্ধার বাসিন্দা দ্বিজেন্দ্রনারায়ণ সরকারের। কয়েক বছর আগে চিরঘুমের দেশে চলে গিয়েছেন তাঁর স্ত্রী। একমাত্র সন্তান পড়াশোনার জন্য থাকেন দূরে। খড়গপুরে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা নিয়ে পড়াশোনা করছেন তিনি। নিঃসঙ্গ প্রৌঢ় তাই মাঝেমধ্যেই চলে আসতেন জলপাইগুড়ির ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কালীতলা রোড সেনপাড়ায় দিদির বাড়ি। রবিবারও হয়েছিল তাই। জমিয়ে সকলের সঙ্গে বসে দুপুরের খাবারদাবার খান দ্বিজেন্দ্রনারায়ণ। খানিকটা বিশ্রাম নিয়ে হাঁটতে বেরোন। কিন্তু সেখানেই যে মৃত্যুফাঁদ, তা আর কে-ই বা জানত। আচমকা ওঠে ঝড়। আর সেই বিপর্যয়েই প্রাণ হারান তিনি। শৈশব থেকে বার্ধক্য – যে ভাইকে সবসময় পাশে পেয়েছেন তিনি, তাঁকে হারিয়ে চোখের জলে ভাসছেন দিদি। “সবই নিয়তি”, বলছে সদ্য স্বজনহারা।
এই বিপর্যয়ে প্রাণ গিয়েছে গোশালার বাসিন্দা অনিমা বর্মনেরও। স্বামী, ছেলেকে নিয়ে দিব্যি সুখের সংসার ছিল অনিমার। তাঁর মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন পরিবারের সকলে। চোখের জল বাঁধ মানছে না কারও। রবিবার রাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন। সদ্য স্বজনহারাদের সমবেদনা জানান মুখ্যমন্ত্রী। জলপাইগুড়িতে ঝড়ের তাণ্ডবে প্রাণ হারিয়েছেন সমর রায় এবং যোগেন রায়ও। ষাটোর্ধ্ব দুই ব্যক্তি চাষবাস করেই সংসার চালাতেন। মাঠে কাজ করতে গিয়ে প্রাণ হারান দুজনে। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন তাঁদের পরিবারের সদস্যরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.