শুভঙ্কর বসু: রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ঘোষণা করেনি। তবু কলকাতা ছাড়লেই অচল এক টাকার ছোট আকারের কয়েন। মুদির দোকানি থেকে সবজি বিক্রেতা, কেউ নিচ্ছেন না এক টাকার কয়েন। কলকাতার আশপাশের সবক’টি জেলায় এখন কার্যত অচল আকারে ছোট এক টাকার কয়েন। আর তা নিয়ে কথা কাটাকাটি, ঝামেলা, এমনকী হাতাহাতি পর্যন্ত হচ্ছে। দুই ২৪ পরগনা, নদিয়া থেকে হুগলি, সর্বত্রই একই অবস্থা। এমনিতেই বাজারে এখন উপচে পড়ছে খুচরো। তার উপর জেলাগুলিতে এক টাকার ছোট আকারের কয়েন অচল হয়ে পড়ায় দুর্ভোগের একশেষ সাধারণ মানুষের।
[উৎসবমুখর শহরে প্রতারণার ফাঁদ, বন্ধুত্বের প্রলোভনে টাকা হাতাচ্ছে সুন্দরীরা]
কিন্তু, কেন নেওয়া হচ্ছে না আকারে ছোট কয়েন? দোকানিদের কাছে স্পষ্ট কোনও উত্তর নেই। কেউ বলছেন, “পঞ্চাশ পয়সার মতো দেখতে তাই নিচ্ছি না।” কারও আবার মন্তব্য –“অত বলতে পারব না। চলছে না তাই নিচ্ছি না।” ২০১১ সালে ২৫ পয়সাকে অচল ঘোষণার পর নতুন ধরনের দু’টাকা, পাঁচ টাকা ও এই এক টাকার ছোট কয়েন চালু করে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এখনও পর্যন্ত ওই কয়েন বাতিল করা হয়নি। তাই আইনত কোনও ভারতীয় নাগরিক ওই কয়েন নিতে অস্বীকার করতে পারেন না। কেউ যদি তা করেন তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে কঠিন শাস্তির মুখে পড়তে হবে। কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবী আশিসকুমার চৌধুরি বলেন, “রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ছোট আকারের এক টাকার কয়েন এখনও বাতিল বলে ঘোষণা করেনি। ফলে যদি কোনও ব্যক্তি বা ব্যবসায়ী তা নিতে অস্বীকার করেন তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪এর(এ) ধারায় দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা হতে পারে। দোষী প্রমাণিত হলে কমপক্ষে তিন বছরের জেল, এমনকী যাবজ্জীবন কারাবাস পর্যন্ত হতে পারে।”
[‘সান্তা’ হয়ে হাওড়া স্টেশনের ভবঘুরে শিশুদের মুখে হাসি ফোটাল রেল পুলিশ]
অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কীভাবে ব্যবস্থা নেওয়া যায়? আইনজীবীদের পরামর্শ, শুধু এক টাকার ছোট কয়েন নয়, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ঘোষিত কোনও কয়েন যদি কেউ নিতে অস্বীকার করেন, তাহলে তৎক্ষণাৎ পুলিশে খবর দিতে হবে। যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে সরাসরি ন্যাশনাল কনজিউমার কমিশনের টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করেও অভিযোগ জানানো যেতে পারে। কমিশনই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সংশ্লিষ্ট থানাকে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানাবে। এছাড়াও বিষয়টি নিয়ে সরাসরি জেলাশাসকেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়। তাতেও কাজ না হলে আদালতের দ্বারস্থ হওয়া যায়।
[জানেন, কীভাবে রেলে শুরু হয়েছিল কমপিউটরে টিকিট সংরক্ষণ?]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.