জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: ২০১৯ সালের নাগরিক সংশোধিত আইন বা সিএএতে (CAA) উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা নেই ৷ এই অভিযোগ তুলে সোমবার মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে বিক্ষোভ দেখাল কয়েকশো উদ্বাস্তু মানুষ ৷ মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের বাড়ির আগেই ব্যারিকেড দিয়ে তাঁদের আটকে দেয় কেন্দ্রীয় জওয়ানরা। মন্ত্রীকে বাড়িতে না পেয়ে ঠাকুরবাড়ি চত্বরে নোটিস টাঙিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। অভিযোগ, মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করিয়ে দেওয়ার নামে কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে মারধর করা হয়।
ইউনাইটেড ফোরাম অফ ভোট ফর ইন্ডিয়া সংগঠনের ডাকে এদিন বনগাঁ এবং বাগদা থেকে কয়েকশো মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। এদিন তাঁদের কর্মসূচিতে ছিল কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে দেখা করা এবং তাঁর কাছে জানতে চাওয়া নিঃশর্ত নাগরিকত্ব পাওয়ার বিষয়টি কেন আজও পূরণ হল না? স্লোগান দিয়ে মিছিল করে ঠাকুরবাড়িতে আসেন আন্দোলনকারীরা। সেখানেই তাঁরা বসে বিক্ষোভ দেখান ৷
সংগঠনের তরফে রাজু ঘোষ এবং মানিক ফকির বলেন, “সিএএ সম্পূর্ণ ভাঁওতা। সিএএতে নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা নেই। শান্তনু ঠাকুর গত লোকসভা ভোটে উদ্বাস্তু নমঃশূদ্র মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলে ভোটে জিতেছিলেন। অথচ ২০১৯-এর সিএএ আইনে নাগরিকত্বর কথাই বলা নেই ৷ আমরা চাই কেন্দ্রীয় সরকার যে ভাঁওতা দিয়েছে সে কারণে শান্তনু ঠাকুরকে ক্ষমা চাইতে হবে ৷” মন্ত্রীর বাড়ির আগেই ব্যারিকেড দিয়ে তাঁদের আটকে দেয় কেন্দ্রীয় জওয়ানরা।
এদিকে কয়েকজন জওয়ান এসে মানিকবাবুকে মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করিয়ে দেওয়ার কথা বলে ব্যারিকেডের ভিতরে নিয়ে যান ৷ অভিযোগ, তাঁকে ব্যারিকেডের ভিতরে নিয়ে গিয়ে লাঠি দিয়ে মারধর করা হয়। কিল-চর-ঘুষি মারা হয় ৷ অভিযোগ, মানিকবাবুর মোবাইল কেড়ে নিয়ে কামনা সাগরে ফেলে দেওয়া হয়। মতুয়াদের পালটা দাবি, কর্মসূচি চলাকালীন উদ্বাস্তুরা শান্তনুর ঠাকুরের বাড়ি উদ্দেশ্য করে ইট-পাটকেল ছুঁড়েছেন। মারধরের ঘটনা মতুয়ারা অস্বীকার করেছেন। যদিও মানিকবাবুর দাবি, “আরএসএস-এর লোকেরা আমাকে মারধর করেছে ৷ শান্তনু ঠাকুরকে এর জবাব দিতে হবে।”
সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “সিএএ চালু না হওয়ার জন্য শান্তনু ঠাকুরকে টিভির পর্দায় প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে ৷ পাশাপাশি এনআরসি থেকে বাঁচার উপায় কী, সেটাও বলে দিতে হবে। আন্দোলন চলতেই থাকবে।” এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, “কারা এসেছিল, আমার জানা নেই। ফলে কোনও মন্তব্য করব না।” তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলে ২০১৯ সাল থেকে শান্তনু ঠাকুর মতুয়া উদ্বাস্তুদের ভাঁওতা দিয়েছেন। তাঁরা বুঝতে পারছেন তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে ৷ তাঁরাই এখন প্রতিবাদ জানাচ্ছেন ৷ এদিনের কর্মসূচি তাঁরাই করেছেন এ বিষয়ে আমাদের কোনও বক্তব্য নেই ৷”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.