দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: ঘূর্ণিঝড় আমফান এগিয়ে আসার খবরে ভয়ে কাঁপতে শুরু করেছে সুন্দরবন। ইতিমধ্যেই মানুষজনের মধ্যে শুরু হয়ে গেছে ঘর গোছানোর তোড়জোড়। প্রশাসনের তরফ থেকে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। প্রতিটা মুহূর্তে নজর রাখা হচ্ছে পুরো পরিস্থিতির দিকে। জারি করা হয়েছে রেড অ্যালার্ট। পঞ্চায়েতগুলিতে খোলা হয়েছে দুর্যোগ মোকাবিলার কন্ট্রোল রুম। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের শনিবার পাওয়া রিপোর্টে জানা গিয়েছে, রবিবার থেকে ঘূর্ণিঝড় উত্তর ও উত্তর পশ্চিম দিকে এগিয়ে যাবে। তারপর সেটি বাঁক নেমে উত্তর ও উত্তর পূর্ব দিকে। ধাবমান হবে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গের উপকূলের উপর দিয়ে। ১৮ থেকে ২০ তারিখের মধ্যে আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড় আমফান।
ইতিমধ্যেই মৎস্যজীবীদের সমুদ্র বা নদীতে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। বনদপ্তরের বিভিন্ন অফিসগুলিতেও জারি করা হয়েছে ঝড়ের সতর্কবার্তা। বিভিন্ন এলাকার আকাশে দেখা দিয়েছে মেঘের ঘনঘটা। বইছে দমকা হাওয়া। তবে এই ঝড় যখন আছড়ে পড়বে তখন ঘণ্টায় গতিবেগ কত থাকবে তার উপর নির্ভর করছে এলাকার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ। জেলাশাসকের তরফ থেকে সমস্ত এলাকাতে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার বকখালি, ফ্রেজারগঞ্জ, নামখানা, মৌসুনি দ্বীপ, সাগর, পাথরপ্রতিমা, কাকদ্বীপ, গোসাবা, বাসন্তী, ক্যানিং, কুলতলি, এবং উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি, হাড়োয়া, মিনাখাঁ-সহ বিভিন্ন এলাকায় নদী বাঁধে বসবাসকারী মানুষদেরকে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে জেলাশাসক পি উলগানাথান বলেন, “দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলীয় এলাকাতে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মৎস্যজীবীদের ১৮ মে পর্যন্ত মাছ ধরতে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আর যে সমস্ত এলাকায় প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে সেই সমস্ত এলাকায় হলুদ সংকেত জারি করা হয়েছে।
বছরখানেক আগে আঘাত হেনেছিল ঘূর্ণিঝড় ফণী। তারপর নভেম্বরে সুন্দরবনে আছড়ে পড়া বুলবুলের ক্ষত এখনও টাটকা। নতুন এই ঘূর্ণিঝড় আসার খবরে স্থানীয়দের মনে আতঙ্ক দানা বেঁধেছে। কারণ, মাঠে পেকে পড়ে আছে বোরো ধান। বহু জমিতে এখনও ধান কাটা বাকি। গাছে আম, কাঁঠাল, লিচু-সহ অন্যান্য ফলও রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় যদি একবার আছড়ে পড়ে তাহলে সব তছনছ করে দেবে। তাছাড়া লকডাউনে বহু মানুষ ভিনরাজ্যে কাজে গিয়ে আটকে পড়েছেন। ঘরে ফিরতে পারছেন না তাঁরাও। প্রায় পুরুষশূন্য এলাকায় তাই আতঙ্কে কাঁটা বাড়ির মহিলারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.