চন্দ্রজিৎ মজুমদার, কান্দি: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির ‘পুরনো পাপী’। জীবনকৃষ্ণের হাতেখড়ি হয় তাঁর হাত ধরেই। সিবিআইয়ের (CBI) জেরায় সন্ধান মিলল জীবনের ‘গুরু’র। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণর হাতেখড়ি হয় বড়ঞার ভড়ঞা গ্রামের অপর এক যুবক কৌশিক ঘোষের হাত ধরে! কৌশিক ঘোষ ইতিমধ্যেই রয়েছে সিবিআই হেফাজতে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই সম্ভবত জীবন সম্পর্কে তথ্য পায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে (Jiban Krishna Ghosh) গ্রেপ্তার করার পর সোমবার সিবিআই আধিকারিকরা কলকাতায় নিয়ে যায়। আদালত তাঁকে চারদিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদ এবং বীরভূম জেলায় চাকরি বিক্রির র্যাকেটে যুক্ত ছিল কৌশিক ঘোষ, জীবনকৃষ্ণ সাহা-সহ বহু এজেন্ট। লেনদেন হত কোটি কোটি টাকা। জানা যায়, কৌশিক ঘোষের সাথে জীবনকৃষ্ণ সাহার পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন কৌশিকের দাদা শিক্ষক সৌমিত্র ঘোষ। এই সৌমিত্র ঘোষ এবং জীবনকৃষ্ণ দুজনেই বীরভূমের নানুর এলাকার একটি প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। পরে কৌশিক ঘোষ ও জীবনকৃষ্ণের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়।
কে এই কৌশিক ঘোষ (Kaushik Ghosh)? কৌশিক ঘোষের বাড়ি মুর্শিদাবাদের বড়ঞা থানার ভড়ঞা গ্রামে। বাবার নাম মহিপতি ঘোষ। পড়াশোনার সুবাদে ছোট থেকেই কৌশিক ঘোষ ভাড়াবাড়িতে সাঁতরাগাছিতে থাকতেন। ওখানেই একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। দু’মাস আগে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার হন কৌশিক ঘোষ-সহ আরও কিছু এজেন্ট। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই সিবিআই জানতে পারে একটা সময় কৌশিক ঘোষ শিক্ষক দুর্নীতি মামলায় কোটি কোটি টাকা তুলেছে। কৌশিকের জাল বিছানো ছিল মুর্শিদাবাদ, বীরভূম-সহ বিভিন্ন এলাকায়।
প্রথমে কৌশিক ঘোষের এজেন্ট হিসাবেই কাজ করতো বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ। বিধায়ক হওয়ার পর থেকেই শিক্ষক নিয়োগ ‘দুর্নীতির ব্যবসা’ নিজেই শুরু করেন জীবনকৃষ্ণ। পরে কৌশিক ঘোষ এবং জীবনকৃষ্ণ সাহা দুজনেই চাকরি বিক্রির মূল পাণ্ডা হয়ে ওঠেন। পরবর্তী সময়ে কৌশিকের সঙ্গে জীবনের বাবার পারিবারিক সম্পর্ক তৈরি হয়। বিধানসভা ভোটের পর কৌশিকের বাবা মহিপতি ঘোষ জীবনকৃষ্ণকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বিভিন্ন জায়গায় নিজের ছেলে বলে ও পরিচয় দিতেন। সিবিআই প্রাথমিকভাবে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করে আরও যেটা জানতে পেরেছে, “প্রথমে কৌশিক ঘোষ এই চাকরি বিক্রির বেনিয়ম-অনিয়মের পথ দেখালেও পরবর্তী সময়ে জীবনকৃষ্ণ নিজেই একজন এজেন্ট হিসাবে কাজ শুরু করেন এবং টাকার বিনিময়ে অযোগ্য ব্যক্তিদের বিভিন্ন স্কুলে চাকরি পাইয়ে দেন। একটা সময় কৌশিক ঘোষ এবং জীবন সাহা হরিহর আত্মা হয়ে ওঠে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.