রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বিজেপিতে অন্তর্কলহ। পঞ্চায়েত ভোটে দলের বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়া ‘বিক্ষুব্ধ’কেই করা হল জেলা সভাপতি! মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলায় এই ঘটনা ঘটেছে। দলের বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়ায় যাঁকে শোকজ করে বহিষ্কার করা উচিত ছিল, তাকেই কিনা এহেন গুরুদায়িত্ব দেওয়া হল। দলের রাজ্য নেতাদের এই সিদ্ধান্তে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছে গেরুয়া শিবিরে। উঠচে প্রশ্ন।
এবার পঞ্চায়েত ভোটে কুলপি পঞ্চায়েত সমিতির ১০ নম্বর আসনে রামনগর গাজীপুরে বিজেপির বিরুদ্ধেই জোড়া পাতা চিহ্নে নির্দল প্রার্থী হয়ে লড়েছিলেন নবেন্দু সুন্দর নস্কর। তাঁকেই এবার মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি করেছে রাজ্য বিজেপি। রবিবার নয়া জেলা সভাপতিদের তালিকা প্রকাশের পর যা নজরে আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন জেলার কর্মীরা। রাজ্য নেতাদের বড় অংশের মধ্যেও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
নতুন জেলা সভাপতি নবেন্দু সুন্দর নস্করকে নিয়ে ক্ষোভ এমন স্তরে পৌঁছেছে যে তাঁর কুশপুতুলও দাহ করেন বিজেপি কর্মীরা। ঘটনাকে ঘিরে মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলায় বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল আরও চরমসীমায় পৌঁছেছে। বিজেপির কর্মকর্তাদের একাংশের প্রশ্ন, যে ব্যক্তি পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপিকে হারাতে উঠে পড়ে লেগেছিলেন তাঁকেই জেলা সভাপতি করা হল কেন? নিজের দলের বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়ার অপরাধে, পার্টি বিরোধী কাজের জন্য দলীয় সংবিধানের ২৫ নম্বর ধারায় শোকজ করে বহিষ্কার করা উচিত বলে দলের একাংশের বক্তব্য।
এদিকে, শুভেন্দু অধিকারীর আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত বিজেপির পরিষদীয় দলের মুখ্যসচেতক মনোজ টিগ্গাকে জেলা সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছেন সুকান্ত মজুমদার। যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে গেরুয়া শিবিরে। মনোজকে আলিপুরদুয়ার জেলায় দলীয় সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়ায় পরিষদীয় দলের মুখ্যসচেতক পদে কি বদল আনতে চলেছে বিজেপি। কারণ, বিজেপিতে সাধারণত এক ব্যক্তি, দুই পদ হয় না। তাহলে কি মনোজকে মুখ্য সচেতকের পদ থেকে সরিয়ে সংগঠনের কাজে ব্যবহার করতে চান সুকান্ত? তবে মনোজকে মুখ্যসচেতকের পদ থেকে সরানো হবে না বলে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব বলছে। বিধানসভায় পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতকের কাজ দায়িত্বের সঙ্গেই সামলাচ্ছেন মাদারিহাটের বিধায়ক তথা সংঘ পরিবারের ঘনিষ্ঠ মনোজ টিগ্গা। এখন প্রশ্ন, বিজেপির এক ব্যক্তি, এক পদ নীতি কি মাদারিহাটের বিধায়কের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হবে, নাকি এর পিছনে রয়েছে অন্য কোনও অঙ্ক রয়েছে?
এদিকে, বেশ কয়েকটি জেলায় সভাপতি বদল না করা নিয়ে আবার দলের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। বীরভূমের জেলা সভাপতি বদল করার দাবি উঠেছিল। আবার হাওড়া গ্রামীণ থেকে শুরু করে ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বর্ধমান সাংগঠনিক জেলার সভাপতি কেন বদল করা হল না তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে অনেকে। এসব জেলায় পঞ্চায়েতে ফল ভাল হয়নি। তা সত্ত্বেও কেন বদল হল না তা নিয়ে ক্ষুব্ধ জেলার কর্মীদের একাংশ। আবার কয়েকটি জায়গায় অপেক্ষাকৃত ভাল ফল হলেও সেখানে বদল করে দেওয়া হয়েছে সভাপতি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.