ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: আঙুলের ছাপ শুধু না, এবার রেশন নিতে গেলে আঙুলের ছবি তুলে রাখবে ইলেকট্রনিক পয়েন্ট অফ সেল বা ই-পস (E-pos) মেশিন। গ্রাহক সম্পর্কে আরও বেশি নির্ভুল তথ্য জোগাড় করে রাখতে এই বিধি লাগু করে দিল ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অফ ইন্ডিয়া বা সংক্ষেপে আধার কর্তৃপক্ষ। বিহার, মহারাষ্ট্রের মতো বহু রাজ্যে ইতিমধ্যে এই কাজ বেশ কিছুদিন হল শুরু করে দিয়েছে তাঁরা। এবার শুরু হল বাংলাতেও (West Bengal)। রেশন বণ্টনে স্বচ্ছতা আনতে এই পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।
এই নতুন পদ্ধতি চালু করতে হলে ই-পস মেশিনের সফটওয়্যার আপডেট করা প্রয়োজন। এই আপডেট প্রক্রিয়ার মধ্যে ঢুকতে হবে তাকে অবিচলভাবে চালু রেখেই। ই-পস মেশিনে আঙুলের ছাপ নেওয়ার যে পদ্ধতি তাতে শুধু আঙুলের রেখার দাগটুকু এতদিন মিলিয়ে নেওয়া হত। এবার থেকে স্ক্যান পদ্ধতিতে আঙুলের ছবি ধরে রাখা হবে। এর মধ্যেই রেশন ডিলারদের অভিযোগ, সেই প্রক্রিয়া করতে গিয়েই রেশন বিলির প্রক্রিয়া ধাক্কা খাচ্ছে। গতি ধীর হয়ে প্রক্রিয়া একেবারে থেমে যাচ্ছে। এর মধ্যে জুন মাসের শেষে এবং জুলাইয়ের শুরুতে যে কারণে প্রায় গোটা দিন রেশন বিলি বন্ধ রাখতে হয়েছিল। ডিলারদের সংগঠন জানাচ্ছে, এ পর্যন্ত তার জন্য কেন্দ্র ও রাজ্যের কার্ড মিলিয়ে প্রায় পৌনে ২ কোটি গ্রাহককে রেশন দেওয়া সম্ভব হয়নি।
খাদ্য দপ্তর সূত্রে জানা যাচ্ছে, এই প্রক্রিয়া থেকে পিছিয়ে আসার কোনও উপায় নেই। আধার কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মেনে তাদের সফটওয়্যার আপডেট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতেই হবে। তার জন্য একবারে না হলে, বারবার চেষ্টা করতে হবে। আর রেশন বিলির চলতি পদ্ধতি চালু রেখেই তা করতে হবে। নাহলে আধার কর্তৃপক্ষের জরিমানার মুখেও পড়তে হতে পারে খাদ্য দপ্তরকে। এক আধিকারিকের কথায়, “গ্রাহকদের সমস্যা হচ্ছে বুঝতে পারছি। তার রেশ ডিলারদের উপর পড়ছে তাও ঠিক। কিন্তু খাদ্য দপ্তর নিরুপায়। এই সফটওয়্যার আপডেট না হলে জরিমানার মুখে পড়তে হবে। কারণ গোটা দেশে পরপর এই পদ্ধতি চালু হয়ে যাবে। আমাদেরও আধার কর্তৃপক্ষের কথা মেনে সেই পদ্ধতিতে কাজ করতে হবে।”
এমনিতেই বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে গ্রাহকের আঙুলের ছাপ নিয়ে রেশন বিলি করতে গিয়ে দীর্ঘদিন সমস্যা হয়েছে। মাঝে তা বড়সর আকার নিয়েছিল আঙুলের ছাপ ঠিকমতো ই-পস মেশিনে না আসায়। বিকল্প হিসাবে শুধু আধার নম্বর মিলিয়ে রেশন দেওয়ার কথা জানায় খাদ্য দফতরের আধিকারিকদের একাংশ। কিন্তু তার লিখিত নির্দেশ না থাকায় বিকল্প পথে গিয়ে খাদ্য দপ্তরেরই পদস্থ আধিকারিকদের কৈফিয়তের মুখে পড়তে হয় ডিলারদের। জরিমানাও হয়। ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স ফেডারেশনের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু বলছেন, “এই সফটওয়ার আপডেট করতে গিয়ে আমাদের গ্রাহকদের রোষের মুখে পড়তে হচ্ছে। বোঝাতে পারছি না যে, এটা আমাদের কোনও গাফিলতি না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.