Advertisement
Advertisement

Breaking News

রেশন দুর্নীতি

নিজের কুকীর্তি ঢাকতে ‘মাওবাদী’ তত্ব! পুরুলিয়ার রেশন ডিলারকে জেরায় নয়া তথ্য

মাওবাদীরা রেশন দোকানে লুট করায় গণবণ্টনে সমস্যা, শনিবারই অভিযোগ করেন ডিলার।

Ration dealer in Purulia takes 'maoist' name to cover his own misdeed
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:August 18, 2019 8:49 pm
  • Updated:August 19, 2019 9:43 am  

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: গণবন্টনে একাধিক বেনিয়ম করে প্রশাসনের হাত থেকে আত্মরক্ষার্থে মাওবাদী-তত্ব খাড়া করেছিলেন  রেশন ডিলার। পুরুলিয়ার ঝালদা এক নম্বর ব্লকের মাঠারিখামার গ্রাম পঞ্চায়েতের রেশন ডিলার শক্তিপদ মণ্ডলকে টানা জেরা করে এই সত্যই জোরদার মনে হচ্ছে পুলিশের। ওই রেশন ডিলার জেরায় নানা বিভ্রান্তিকর কথাও বলছেন বলে অভিযোগ।

[আরও পড়ুন: স্লুইস গেট ভেঙে নতুন খাল তৈরি, ভরা বর্ষায় ইছামতীর জলে প্লাবিত গ্রামের পর গ্রাম]

রাতের অন্ধকারে হানা দিয়ে মাওবাদীরা রেশন সামগ্রী লুঠ করে নিয়ে যাচ্ছে। তাই পরিমাণমতো তা জনগণকে দেওয়া যাচ্ছে না। জেলা প্রশাসনের ‘গো টু ভিলেজ’ কর্মসূচিতে যাওয়া আধিকারিকদের কাছে এমনই নালিশ করেছিলেন ঝালদার খামার রেশন দোকানের ডিলার শক্তিপদ মণ্ডল। মাওবাদীদের নাম করে তাঁর কাছ থেকে তোলা আদায় করা হয় বলেও অভিযোগ ছিল। পরে এই বয়ানের সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে অসঙ্গতি মেলে। পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘ওই রেশন ডিলারের কাজকর্মে নানা বেনিয়ম মিলেছে। তাঁকে জরিমানা করা হবে।‘ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তে বেনিয়ম প্রমাণিত হলে এফআইআর হবে।

Advertisement

পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে,  এই রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে পণ্য কম দেওয়া, সময়মতো দোকান না খোলা, ক্যাশ মেমো না দেওয়া, এমনকী রেশন পণ্য  অন্যত্র বিক্রি করে দেওয়ার মত অভিযোগ রয়েছে। তাই শনিবার জেলা প্রশাসনের ‘গো টু ভিলেজ’  কর্মসূচিতে প্রশাসনিক আধিকারিকরা আচমকা ওই রেশন ডিলারের দোকানে হানা দেন। তাঁরা সেখানে গিয়ে দেখেন, ডিলারের কোনও ক্যাশ মেমোই নেই। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা নানা অভিযোগ নিয়ে জেলাশাসক শক্তিপদ মণ্ডলকে প্রশ্ন করতেই ওই রেশন ডিলার জানান,  রাতের বেলায় রেশন পণ্য লুট করে নিয়ে যাচ্ছে মাওবাদীরা। তাই গ্রাহকদেরকে পরিমাণমতো পণ্য দেওয়া যাচ্ছে না। ব্যাহত হচ্ছে গণবণ্টন পরিষেবা। একথা শুনে কিছুটা বিস্মিত হন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়, এনিয়ে তিনি থানায় অভিযোগ করেছেন কিনা। ডিলার জানান যে তিনি কোনও অভিযোগ করেননি। প্রশাসনের সন্দেহ বাড়ে। সঙ্গে সঙ্গে সমগ্র বিষয়টি জেলা পুলিশ সুপার আকাশ মাঘারিয়াকে জানান জেলাশাসক রাহুল মজুমদার। জানানো হয় খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তরেও। রেশন ডিলার শক্তিপদ মণ্ডলের বিরুদ্ধে তদন্তও শুরু হয়।

[আরও পড়ুন: জ্বর-বমিতে মৃত্যু, দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে অজানা রোগ]

রবিবার ঝালদা থানার আইসি ওই রেশন ডিলারের কাছে যান। তাঁকে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁর কথায় নানা অসঙ্গতি ধরতে পারে পুলিশ। ঝালদা থানার পুলিশ আধিকারিকদের বিভ্রান্ত করতে নানান কথা বলেন ওই ডিলার। কখনও আবার কবুল করেন, মাওবাদীদের রেশন লুটের বিষয়টি ভুল করে বলেছেন। তারপর আবার অভিযোগ করেন, কিছুদিন আগে মাওবাদীদের  নাম করে তাঁর কাছ থেকে কয়েকজন টাকা নিয়ে গেছেন। তবে তাঁর  এই অভিযোগেরও কোনও প্রমাণ পায়নি ঝালদা থানার পুলিশ। ফলে বিষয়টি এই মুহূর্তে বেশ জটিল হয়ে গিয়েছে। যদিও তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান, রেশন ডিলার নিজের দুর্নীতি ঢাকতেই মাওবাদীদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়েছেন।

ছবি: অমিত সিং দেও।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement