নন্দন দত্ত, সিউড়ি: তিন বছর আগে মাসির কিশোরী কন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগ। অভিযোগ প্রমাণ হতেই ধর্ষককে যাবজ্জীবন সাজা শোনালো আদালত। সেই সঙ্গে ২০ লক্ষ টাকা জরিমানা। অনাদায়ে আরও দু’বছর জেল। সাজা শোনালো সিউড়ি জেলা আদালত।
পুলিশ জানিয়েছে, তিন বছর আগে আগস্টের এক সন্ধ্যায় প্রতিবেশী মাসির বাড়িতে টিভি দেখতে যায় বছর ১৬-র কিশোরী। একাই টিভি দেখছিল সে। অভিযোগ, সেই সুযোগই নেয় মাসির ছেলে প্রশান্ত বাগদি। কিশোরীকে ধর্ষণ করে সে। ঘটনার অভিঘাতে মানসিক ভারসাম্য হারায় নির্যাতিতা কিশোরী। ধর্ষণের জেরে গর্ভবতীও হয়ে পড়ে নির্যাতিতা। তার পরিবার ধর্ষণের অভিযোগও দায়ের করে। কিন্তু মানবিকতার খাতিরে মানসিক ভারসাম্যহীন নির্যাতিতাকে আদালতে নিয়ে যাওয়া যায়নি। সিউড়ি শহরের একটি হোমে রেখে দীর্ঘদিন তার মানসিক চিকিৎসা চলে। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে কিশোরী। এরপরই আদালতের তরফে তাঁর গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়। অভিযুক্তকে চিহ্নিত করতে কোনওরকম বেগ পেতে হয়নি।কিন্তু অন্য জায়গায় সমস্যা বাধে। অভিযুক্তও তখন নাবালক। সিউড়িতে জুভেনাইল কোর্ট না থাকায় বিচারে দেরি হচ্ছিল। এদিকে মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় নির্যাতিতার পরিবার। সিউড়ির আদালতকে মামলা দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। এদিন বিচারক পার্থসারথি সেনের এজলাশে বিশেষ ব্যবস্থায় বিচারপর্ব শুরু হয়। শুনানির শেষে চূড়ান্ত রায় দেন বিচারক।
এই প্রসঙ্গে সরকারি আইনজীবী সৈয়দ সামিদুল আলম বলেন, নির্যাতিতা ও অভিযুক্তের ডিএনএ টেস্টের রিপোর্ট দেখেই নিশ্চিত হওয়া যায় ধর্ষিতা হয়েছে কিশোরী। ধর্ষণ করেছে প্রতিবেশী মাসির ছেলে প্রশান্ত। শনিবারের বিচারকের এজলাসে ১৭ জন সাক্ষ্য দেয়। তার ভিত্তিতেই এদিন বিচারক পার্থসারথি সেন ধৃতের যাবজ্জীবন সাজা, সঙ্গে ২০ লক্ষ টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও দু’বছর সাজার নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে জেলা আইনি সহায়তা কেন্দ্রের তরফে নির্যাতিতাকে আরও পাঁচ লক্ষ টাকা অনুদান দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। বিচার পেয়ে খুশি নির্যাতিতার পরিবার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.