চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: রাস্তা তৈরির জন্য একাই পাহাড় ভেঙেছিলেন দশরথ মাঝি। এবার পানীয় জলের জন্য একাই কুয়ো খুঁড়ে ফেললেন এক আদিবাসী ছাত্রী। বাড়িতে জলের সমস্যা। অনেক দূর থেকে জল বয়ে নিয়ে আসেন মা। রোজ মায়ের এই কষ্ট আর দেখতে পারছিলেন না, অতঃপর মায়ের পরিশ্রম কমাতে নিজেই আস্ত এক কুয়ো খুঁড়ে ফেললেন মেধাবী ছাত্রী ববিতা সোরেন।
রানিগঞ্জ বল্লভপুর পঞ্চায়েতের বক্তানগর আদিবাসী পাড়ার বাসিন্দা ববিতা সোরেন সেই অসাধ্য সাধন করে ফেলেছেন। ববিতা বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে এমএ পাশ করেছেন। এখন বিএড করছেন। লকডাউনের জেরে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সব বন্ধ। হাতে অফুরন্ত সময়। তাই মায়ের কষ্ট লাঘব করতে ঝুড়ি আর কোদাল হাতে নিজেই ময়দানে নেমে পড়েছেন বিএড পড়ুয়া ববিতা।
ববিতার পরিবারের দাবি, জলের সমস্যা রয়েছে প্রথম থেকেই। আমাদের বাড়িটি গ্রামের একেবারে শেষ প্রান্তে। গ্রামের ঢোকার মুখেই টিউবওয়েল রয়েছে। সেখান থেকে রোজ জল বয়ে আনতে অনেক কষ্ট হয়। তাঁর ওপর আবার জল নেওয়ার জন্য দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়েও থাকতে হয়।
ববিতার মা মীনা সোরেন বলেন, টাকা পয়সা না থাকার জন্য লোক লাগিয়ে কুয়ো করতে পারিনি। উপরন্তু লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন স্বামী ও তাঁদের ছেলে। এই কথা শুনে মেয়ে ঝুড়ি আর কোদাল নিয়ে শুরু করে দেয় কুয়ো খুঁড়তে। ববিতা বলেন প্রথমে একটু কষ্ট হয়েছিল কুয়ো খুঁড়তে গিয়ে। পরে মা ও বোনের সাহায্য পেয়ে দ্রুত গতিতে কুয়ো খোড়ার কাজ চলছে। ইতিমধ্যেই ১৮ ফুট মাটি খোঁড়া হয়ে গিয়েছে। ববিতার আশা, কয়েক দিনের মধ্যেই জল বেরিয়ে আসবে মাটির নিচ থেকে। পরিবারের লোকেদের আর পানীয় জল পেতে কষ্ট করতে হবে না!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.