Advertisement
Advertisement
Raniganj

কার্বাইন বনাম সার্ভিস রিভলবার! রানিগঞ্জে ৭ ডাকাতের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ ‘দাবাং’ আইসির

'দাবাং' আইসির ছোঁড়া গুলিতেই ঘায়েল হয় বিহারের 'মোস্ট ওয়ান্টেড' ডাকাত।

Raniganj IC ran behind dacoit gang to catch robbers

(বাঁদিকে) আইসির দৌড়, (মাঝে) শ্রীপুর ফাঁড়ির আইসি, (ডানদিকে) বাইকে চড়ে এলাকা ছাড়ছে দুষ্কৃতীরা

Published by: Sayani Sen
  • Posted:June 10, 2024 11:07 am
  • Updated:June 10, 2024 12:19 pm  

শেখর চন্দ্র, আসানসোল: বাইকে উঠে পালানোর চেষ্টা করছে দুষ্কৃতীরা। তাদের প্রত্যেকের হাতে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র। পিছনে সার্ভিস রিভলবার হাতে একা দৌড়ে চলেছেন শ্রীপুর ফাঁসির আইসি। রানিগঞ্জের বিখ্যাত স্বর্ণবিপণিতে ডাকাতির পরের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে মনে হতেই পারে এ কোনও সিনেমার দৃশ্য! ‘দাবাং’ আইসির ছোঁড়া গুলিতেই ঘায়েল হয় বিহারের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ ডাকাত। জখম অবস্থায় তাকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

রবিবার দুপুরে রানিগঞ্জের এনএস রোডের ধারের সোনার শোরুমে যখন তাণ্ডব চালাচ্ছিল দুষ্কৃতী দল, সেই সময় ঘটনাস্থলে ব্যক্তিগত কাজে উপস্থিত হয়েছিলেন মেঘনাদ মণ্ডল। তিনি জামুড়িয়া থানার শ্রীপুর ফাঁড়ির আইসি। ব্যক্তিগত কাজ নিয়ে হার্ডওয়ারের দোকানে গিয়েছিলেন। দোকান থেকে বেরিয়ে চোখ পড়ে তাঁর সোনার দোকানের শোরুমে। লক্ষ্য করেন আগ্নেয়াস্ত্র হাতে এক যুবক ভিতরে ঢুকছে আর বেরচ্ছে। দুঁদে অফিসারের নজর এড়ায়নি। সতর্ক হয়ে যান। নেন পজিশন। দোকানের বাইরে দুই দুষ্কৃতী বেরিয়ে আসতেই গুলি চালান মেঘনাদ। কোমরে গুলি লাগে এক দুষ্কৃতীর। পড়ে যায় সে। এর পর ৫ দুষ্কৃতী মিলে মেঘনাদকে লক্ষ্য করে লাগাতার গুলি চালাতে থাকে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: জামাইষষ্ঠীতে বঙ্গে ঝেঁপে বৃষ্টি? জেনে নিন কী বলছে হাওয়া অফিস]

ল্যাম্পপোস্টের আড়াল থেকে একাই পালটা গুলির লড়াই চালাতে থাকেন ওই আইসি। ততক্ষণে দুটি মোটর বাইকে সাতজন দুষ্কৃতী পালাতে চেষ্টা করে। একদিকে অত্যাধুনিক অস্ত্র থেকে দুষ্কৃতীদের এলোপাথাড়ি গুলি। হাতে দেখা যায় কার্বাইনও। পালটা মেঘনাদ মণ্ডলের সার্ভিস রিভলবারের টার্গেটে ডাকাতরা। তখনও রানিগঞ্জ থানার পুলিশের দেখা নেই। প্রাণের ভয় না করে, জমি না ছেড়ে শেষ পর্যন্ত ৭ দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে একাই লড়ে গিয়েছেন শ্রীপুর ফাঁড়ির আইসি মেঘনাদ মণ্ডল। তাঁরই গুলিতে আহত হয় এক দুষ্কৃতী। শেষ পর্যন্ত বাধার মুখে পড়ে, রক্তাক্ত হয়ে কোনওমতে দুটি বাইকে সাত দুষ্কৃতী এলাকা ছাড়ে। তখনও বাইকের পিছনে ধাওয়া করেন মেঘনাদ মণ্ডল। অবশেষে ওই জখম ডাকাতকে অবশ্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গত বছর রানাঘাটের শোরুমে হানা দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। সেই সময়ও ঠিক একইভাবে এসআই রতন রায়ের টার্গেটে পড়ে পালাতে হয়েছিল দুষ্কৃতীদের। এবার শ্রীপুর ফাঁকির আইসি মেঘনাথ মণ্ডল। মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা মেঘনাদ প্রথমে কনস্টেবল পদে বীরভূমের পুলিশ লাইনে ছিলেন। পরবর্তীতে সাব ইন্সপেক্টর পরীক্ষায় পাশ করেন। দুর্গাপুরে এএসআই হিসেবে যোগদান করেন। বেশ কয়েক বছর দুর্গাপুরে কয়েকটি থানায় কাটানোর পর রানীগঞ্জ থানায় ও বেশ কয়েকটি পুলিশ ফাঁড়িতে এএসআই হিসেবে কাজ করেন। এর পরই দুর্গাপুরের বিধাননগরে বছর তিনেক আইসি ছিলেন। বর্তমানে জামুরিয়া থানার শ্রীপুর পুলিশ ফাঁড়িতে অফিসার ইনচার্জ। তাঁকে কুর্নিশ জানিয়েছেন রানিগঞ্জবাসী। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশের ডিসি সেন্ট্রাল ধ্রুব দাস বলেন, “উনি অফিসিয়াল কাজে এসেছিলেন। একা সাতজনের সঙ্গে লড়াই চালিয়েছেন। সত্যিই প্রশংসাযোগ্য কাজ করেছেন।” রানিগঞ্জের বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ও আইসির প্রশংসা করেন।

[আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ বিভ্রাটেও টানেলে আর থমকাবে না মেট্রো! নয়া ভাবনা কর্তৃপক্ষের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement