সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: মৎস্যজীবীদের হাতে ফের আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভরতি এক বন আধিকারিক৷ আহত আরও ৪ জন৷ দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘি রেঞ্জের দমকল এলাকার ঘটনা৷ লাইসেন্স সংক্রান্ত জটিলতার জেরে মৎস্যজীবীদের হাতে বেধড়ক মার খেয়ে ওই অফিসার ভরতি রায়দিঘি হাসপাতালে৷
বনের মধ্যে খাঁড়ি ও নদীতে যন্ত্রচালিত মাছ ধরার নৌকার লাইসেন্স নিয়েই বৃহস্পতিবার মৎস্যজীবীদের সঙ্গে বনদপ্তরের এক আধিকারিক এবং কর্মীদের ঝামেলা বাঁধে৷ সপ্তাহে দু’দিন বোট লাইসেন্স সার্টিফিকেটের রিনিউ করা হয় রায়দিঘি রেঞ্জের নলগোড়া বিট এলাকার মৎস্যজীবীদের নৌকায়৷ সেইমতো বৃহস্পতিবারও লাইসেন্স পুনর্নবীকরণের কাজ চলছিল রায়দিঘি বিটের দমকল এলাকায়৷ কিন্তু নিয়ম বহির্ভূতভাবে মাছ ধরার জন্য যন্ত্রচালিত বোটের লাইসেন্স দেননি রেঞ্জ অফিসার৷ অভিযোগ, আচমকাই কয়েকজন মৎস্যজীবী চড়াও হন রায়দিঘির রেঞ্জার অশোক কুমার নস্করের উপর৷ তাঁর মাথা ফেটে যায়৷ অফিসারকে বাঁচাতে গিয়ে মৎস্যজীবীদের হাতে আক্রান্ত হন আরও ৪ বনকর্মী৷ এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে৷ পুলিশের সাহায্যে তাঁদের সকলকে উদ্ধার করে রায়দিঘি হাসপাতালে ভরতি করা হয়৷
হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর কিছুটা সম্বিৎ ফিরে পেয়ে অশোক কুমার নস্কর পুলিশকে জানান, ‘নিয়মমাফিক মৎস্যজীবীদের দাঁড় টানা নৌকাগুলির বিএলসি রিনিউয়ালের কাজ চলছিল৷জঙ্গলে দূষণের জন্য কোনও যন্ত্রচালিত নৌকাকে এই লাইসেন্স দেওয়া হয় না৷’ কিন্তু এদিন যন্ত্রচালিত নৌকাগুলিকে লাইসেন্স দেওয়ার দাবি তোলেন মৎস্যজীবীরা৷ কিন্তু তা মানা হয়নি৷ আর তাতেই ক্ষিপ্ত মৎস্যজীবীরা হামলা চালান বলে অভিযোগ৷
পালটা যুক্তি দেখিয়েছেন মৎস্যজীবীরাও৷ কাকদ্বীপ ফিশারমেন ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিজন মাইতির কথায়, ‘এর আগে বেশ কয়েকবার যন্ত্রচালিত নৌকার লাইসেন্স দেওয়া নিয়ে বনদপ্তরের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে৷ লাভ হয়নি কিছু৷ কিন্তু আমাদের প্রশ্ন, যদি সুন্দরবনের কোর এলাকায় দূষণের কারণ দেখিয়ে মাছ ধরার জন্য যন্ত্রচালিত নৌকা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়, তাহলে এই নৌকাগুলোই কীভাবে পর্যটকদের নিয়ে খাঁড়ি অঞ্চলে যায়? তখন কি দূষণ হয় না?’ বনদপ্তর এব্যাপারে উদাসীন বলে মনে করছে মৎস্যজীবী সংগঠন৷ তবে বারবার সুন্দরবন এলাকায় কাজ করতে গিয়ে বন আধিকারিকদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ বাড়াচ্ছে বনদপ্তরের৷ কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.